বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পদ্মার পর সেতুও গেল, রইল শুধু স্বপ্ন

  •    
  • ২৪ জুলাই, ২০২২ ২৩:৪৭

একদিনের ব্যবধানে দুই সন্তানের মৃত্যুতে জাহিদুল বলেন, ‘আমি আল্লাহকে বলেছি- পদ্মা ও সেতুকে কেড়ে নিলে, স্বপ্নকে যেন আমাদের কাছ থেকে না কাড়েন।’

চলতি মাসের ১৮ জুলাই দিনাজপুরের বিরামপুর ইমার উদ্দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে একসঙ্গে ৩ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন সাধিনা বেগম। জন্মের পরপরই তাদের নাম রাখা হয়- স্বপ্ন, পদ্মা ও সেতু।

কিন্তু জন্মের মাত্র পাঁচদিনের মধ্যেই গত শনিবার মারা যায় পদ্মা। এ ঘটনার একদিন পার হতে না হতেই এবার মারা গেল সেতুও।

রোববার রাত ৯টার দিকে সেতুর মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তার বাবা জাহিদুল ইসলাম। তিনি বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের কৃষ্টবাটি গ্রামের বাসিন্দা।

জাহিদুল বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যায় পদ্মা মারা যাওয়ায় রোববার দুপুরে বিরামপুরের চিকিৎসক জাকিরুলের কাছে স্বপ্ন ও সেতুকে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক ৫ দিনের ওষুধ দেন এবং সরকারি হাসপাতালে নিয়ে বাচ্চাগুলোকে আধা ঘণ্টা অক্সিজেন দিতে বলেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে অক্সিজেন দিয়ে স্ত্রীকেসহ বাচ্চাদের বাড়িতে পাঠিয়ে আমি কাজে চলে যাই। রাতে বাড়িতে এসে খাওয়া-দাওয়া করে বাড়ি থেকে আবার বের হই। পরে রাত সোয়া ৯টায় আমার শাশুড়ি ফোন দিয়ে জানান সেতু মারা গেছে।’

জাহিদুল জানান, সোমবার সকালে পদ্মার পাশেই সেতুকে দাফন করা হবে।

এ ছাড়া সেতুর মৃত্যুর খবর শুনে চিকিৎসক স্বপ্নকে ঠিকমতো ওষুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

সেতুর মৃত্যুর বিষয়ে বিরামপুরের ইউএনও পরিমল কুমার সরকার বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। আমি ওই শিশুগুলোর জন্য কিছু আর্থিক সাহায্য দিয়েছি। দুটি শিশু মারা গেছে। আরেকজন বেঁচে আছে। তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর ও অথবা দিনাজপুর নিয়ে যেতে বলেছি। প্রয়োজন হলে তাদের আরও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।’

পরিবারের বরাতে জানা গেছে, জন্মের পরপরই কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসকরা প্রসূতি সহ পদ্মা, স্বপ্ন ও সেতুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেছিলেন। পরে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থভাবে ৩ সন্তান নিয়ে বাড়ি ফেরেন সাধিনা।

একসঙ্গে ৩ সন্তান জন্ম হওয়ায় আনন্দের জোয়ার বইছিল সাধিনা ও জাহিদুল দম্পতির ঘরে। কিন্তু সেই আনন্দ এবার মলিন হয়ে গেছে পদ্মা ও সেতুর মৃত্যুতে।

বাবা জাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি স্ত্রী সাধিনাকে নিয়ে ঢাকার গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার সংসারে ১৪ বছর বয়সী এক কন্যা রয়েছে। গত ৭ জুলাই সন্তান প্রসবের জন্য তিনি স্ত্রীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরে ১৮ জুলাই দুপুরে একসঙ্গে তিন সন্তান প্রসব করেন সাধিনা।

একই দিনে মা ও সন্তানদের দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল হাসপাতাল নিয়ে গেলে সেখানে তিনদিন চিকিৎসার পর গত ২১ জুলাই সুস্থ সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি।

একদিনের ব্যবধানে দুই সন্তানের মৃত্যুতে জাহিদুল বলেন, ‘আমি আল্লাহকে বলেছি- পদ্মা ও সেতুকে কেড়ে নিলে, স্বপ্নকে যেন আমাদের কাছ থেকে না কাড়েন।’

এ বিভাগের আরো খবর