সিলেটে ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের নতুন সূচি প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
রোববার বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ নতুন সূচি জারি করেছে।
সিলেটে পাঁচটি বিতরণ অঞ্চলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। কেবল বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ নয়, সব অঞ্চলেই ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং ধরে নতুন সূচি প্রকাশ করবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সময়সূচি নির্ধারণ করে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৮ জুলাই এ তথ্য জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, প্রধমে দিনে ১ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে। এতে কাজ না হলে ২ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে।
গ্রাহকদের অভিযোগ, শুরু থেকেই এমন ঘোষণা মানছে না সিলেট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ। ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং ধরে প্রথম দিনই সূচি প্রকাশ করে তারা। যদিও নিজেদের প্রকাশিত সূচি না মেনে প্রথম দিন থেকেই অনেক জায়গায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হয়।
এবার ১৩ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের সূচি প্রকাশ করা হলো।
দিনের বেশির ভাগ সময় লোডশেডিং ধরে সূচি প্রকাশের তথ্য নিশ্চিত করেন বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সামছ ই আরেফিন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। রোববার যে চাহিদা রয়েছে, তার মাত্র ৩৩ শতাংশ বরাদ্দ পাচ্ছি। এতে শিডিউলের বাইরে গিয়ে আরও বেশি সময় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষজন যেন আগে থেকেই জানতে পারেন, সে জন্য ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং ধরে সূচি প্রকাশ করেছি। এটিও প্রাথমিক সূচি। বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে লোডশেডিং সূচি থেকে বাড়তে বা কমতে পারে।
রোববার জারি করা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর শিডিউলে দেখা যায়, তাদের আওতায়ভুক্ত এলাকাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
নতুন শিডিউল অনুযায়ী মহানগরীর বালুচর, আরামবাগ, আল-ইসলাহ, নতুন বাজার, গোপালটিলা, আলুরতল, টিবি গেট, সোনারপাড়া, মজুমদারপাড়া, পূর্ব মিরাবাজার, দর্জিপাড়া, খারপাড়া, কুমারপাড়া, নাইওরপুল, ধোপাদিঘিরপাড়, ঝরনারপাড়, কুশিঘাট, নয়াবস্তি, টুলটিকর, মিরাপাড়া, মেন্দিবাগ, সাদাটিকর, নোওয়াগাঁও, শাপলাবাগ, মেন্দিবাগ, হকার্স মাকেট, কালীঘাট, আমজাদ আলী রোড, মহাজনপট্টি, মাছিমপুর, ছড়ারপার, উপশহর ব্লক-এইচ, আই, জে, ই, এফ, জি, সাদাটিকর, রায়নগর, ঝর্নারপাড়, দর্জিবন্দ, বসুন্ধরা, খরাদিপাড়া, দপ্তরীপাড়া, আগপাড়া, কাজীটুলা, মানিকপীর মাজার, নয়াসড়ক, বারুতখানা, জেলরোড, হাওয়াপাড়া, চারাদিঘীরপাড়, চালিবন্দর, কাষ্টঘর, সোবহানীঘাট, বিশ্বরোড, জেলখানা, বঙ্গবীর, পৌরমার্কেট, শিবগঞ্জ, টিলাগড়, সবুজবাগ, সেনপাড়া, হাতিমবাগ, লামাপাড়া, রাজপাড়া উপশহর ব্লক-এ, বি, সি, ডি, তেররতন, মেন্দিবাগ পয়েন্ট, ডুবড়ীহাওর, নাইওরপুল, ধোপাদিঘিরপাড়, সোবহানীঘাট, বঙ্গবীর যতরপুর, মিরাবাজার, আগপাড়া, ঝেরঝেরিপাড়া, মীরেরচক, মুক্তিরচক, মুরাদপুর, পীরেরচক এলাকাগুলো ২৪ ঘণ্টায় ১১ থেকে ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের মধ্যে পড়বে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির নিউজবাংলাকে বলেন, কেবল বিতরণ বিভাগ-২ নয়, পুরো সিলেটেই এমন অবস্থা। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং ধরে নতুন সূচি করা হচ্ছে ।কলকারখানা চালু থাকায় দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ কম মিলছে। দিনে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে, রাতের অবস্থা অপেক্ষাকৃত ভালো।
কাদির বলেন, রোববার বিকেলে সিলেট জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ২০০ মেগাওয়াট। এ সময় আমরা সরবরাহ পেয়েছি অর্ধেকের চেয়েও কম। ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিয়ে গ্রাহকসেবা দিতে হচ্ছে। এতে শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। এ কারণে লোডশেডিংয়ের সময় বাড়িয়ে নতুন শিডিউল করা হচ্ছে।
শহরের চেয়ে গ্রামে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরও খারাপ। গ্রামাঞ্চলে দিনে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।