গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকায় ট্রেনের সঙ্গে শ্রমিকবাহী একটি বাসের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার দুপুরের এই সংঘর্ষে বাসটির চালক তাজুল ইসলাম ছাড়াও আর চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
৩৩ বছর বয়সী নিহত বাসচালক তাজুল ইসলাম গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার টোক ইউনিয়নের পাচুয়া গ্রামে মো. হাদিউল ইসলামের ছেলে। তিনি জামান ফ্যাশনের শ্রমিকবাহী বাসের নিয়মিত চালক।
নিহত বাকি চারজনের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- বরমী ইউনিয়নের জুলহাস মিয়ার স্ত্রী ২২ বছরের প্রিয়া আক্তার, জামান ফ্যাশনের বাসের চালক ও পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার টোক ইউনিয়নের পাচুয়া গ্রামের হাদিউল ইসলামের ছেলে ৩২ বছরের তাজুল ইসলাম এবং ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার চরমাধাখালী গ্রামের সামাল উদ্দিনের ছেলে ইলিয়াস উদ্দিন।
দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুরের ইউএনও তরিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় অজ্ঞাত অন্য শ্রমিকের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
জয়দেবপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুল্লাহ হিরো বলেন, ‘দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি একজনের মরদেহ এখনও আমরা পাইনি।’
বরিশাল
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গড়িয়ারপাড়ে বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মাহিন্দ্রার এক যাত্রী নিহত হয়েছেন।
রোববার দুপুর ১টায় এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন একই পরিবহনের আরও চার যাত্রী। তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আনুমানিক ৪০ বছর বয়সী নিহত ব্যক্তির পরিচয় এখনও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে একটি মাহিন্দ্রা যাত্রী নিয়ে রহমতপুরের উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথে গড়িয়ারপাড়ে বিপরীত দিক থেকে নথুল্লাবাদের উদ্দেশে ছেড়ে আসা দিদার পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মাহিন্দ্রাটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মাহিন্দ্রার এক যাত্রী নিহতসহ আরও চারজন গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা নিহত এবং আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে পাঠায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের এসআই শফিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পর চালক-হেলপার বাসটি ফেলে পালিয়ে গেছে। বাস ও মাহিন্দ্রা পুলিশ হেফাজতে আছে।
মুন্সীগঞ্জ
বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের (ঢাকা-মাওয়া) সার্ভিস লেনে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে একজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছে।
রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শ্রীনগর উপজেলার কেয়টখালী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটলে পিকআপচালক শ্রীনগর গাজাল হাসির আক্কাস দেওয়ানের ছেলে শাকিল দেওয়ানকে আটক করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনে ঢাকামুখী তীর কোম্পানির একটি হলুদ রংয়ের পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশায় থাকা ১ নারী নিহত হন।
নিহত নারীর পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় গুরুতর আহত চারজনকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদেরকে ঢাকায় রেফার্ড করেন।
হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট দুলাল আহমেদ জানান, এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন।
উপজেলার চরহোসেনপুর নামক স্থানে শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ও রোববার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে হারুয়া বাজার এলাকায় ওই দুটি দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার জিগাতলা গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার আরজিপাড়া গ্রামের সরকার উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হাকিম।
বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া প্রাইভেটকার
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা একটি বাস রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের ঈশ্বরগঞ্জের হারুয়া বাজার পর্যন্ত আসে। এ সময় বাসটির সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধলে কিশোরগঞ্জগামী একটি প্রাইভেট কার দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেট কারের চালক সাইফুল মারা যান।’
অপরদিকে শনিবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে একই সড়কের চরহোসেনপুর নামক স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে দ্রুতগতির অপর ট্রাক ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এ সময় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের চালক আব্দুল হাকিম ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। পরে স্থানীয়রা চালকের সহকারী শাহিনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ওসি জানান, দুই দুর্ঘটনায় দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত সাইফুল ইসলামের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিহত আব্দুল হাকিমের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে। দুটি ঘটনায় বাসটিকে জব্দ করলে এর চালক এবং ট্রাকসহ এর চালকও পালিয়ে গেছে।