টাকা চুরির অভিযোগে এক শিশুকে মাথা ন্যাড়া করে শিকলে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে।
নেত্রকোণার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামে শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত শিশুটিকে নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটেছে।
মদনের ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুলতান উদ্দিন নির্যাতনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে আমিই শিশুটিকে মুক্ত করেছি।’
নির্যাতনের শিকার শিশুর নাম রানা মিয়া। তার বয়স ১১ বছর। রানা রুদ্রশ্রী গ্রামের হতদরিদ্র জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে। তার মা বেঁচে নেই।
সুলতান উদ্দিন জানান, রুদ্রশ্রী গ্রামের কাজল মীরের ছেলে সুমন মীর শনিবার সকালে তার ঘরের একটি বাক্সে ১১ হাজার ৫০০ টাকা রাখেন। এ সময় শিশু রানাসহ তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিল। বিকেলে হাওর থেকে ফিরে এসে সুমন দেখেন তার বাক্সে টাকা নেই। টাকা চুরি হওয়ায় রানাকে সন্দেহ করেন সুমন।
শনিবার সন্ধ্যায় সুমন ও তার ভাই হুমায়ূন শিশু রানাকে তার ঘরে নিয়ে আটকে রাখেন। রাতভর আটক রেখে নির্যাতনের পর রোববার সকালে প্রথমে শিশুটির মাথা ন্যাড়া করেন। পরে বাড়ির সামনের একটি খুঁটিতে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন।
রোববার সকালে মুক্ত করার সময় শিশু রানা উপস্থিত লোকদের বলে, ‘আমি কোনো টাকা চুরি করিনি। আমাকে শনিবার সন্ধ্যা থেকে ঘরে আটকে রেখে মারপিট করেছে। সকালে আমার মাথার চুল কেটে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রেখেছে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সুলতান উদ্দিন বলেন, ‘চুরির অপবাদে শিশুটিকে মাথা ন্যাড়া করে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখার ঘটনাটি সত্য। প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়ে আমি দৌড়ে গিয়ে তাকে মুক্ত করেছি। অথচ শিশুটি টাকা চুরি করেছে বলে কোনো প্রমাণ নেই।’
তিনি বলেন, ‘সুমন ও তার ভাই হুমায়ূন কাজটি খুব অন্যায় করেছেন। নিজ ছেলেকে এভাবে নির্যাতনের বিচার দাবি করেছেন শিশুটির বাবা জাহাঙ্গীর।’
অভিযুক্ত সুমন মীর বলেন, ‘শনিবার সকালে রানার সামনে আমি ১১ হাজার ৫০০ টাকা রেখেছি। তখন সে ছাড়া বাইরের কেউ ছিল না। রানাই আমার টাকা চুরি করেছে।’
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শিশুর অভিভাবকদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আমরা অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব।’