কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্বামীর বঁটির কোপে জখম এক নারী মৃত সন্তান প্রসব করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে।
অস্ত্রোপচারে শুক্রবার দুপুরে ভূমিষ্ঠ হয় ছেলেশিশুটি, যার হাতে ছিল আঘাতের চিহ্ন।
স্বামী জাহিদের সঙ্গে ভৈরবের নিউটাউন এলাকায় থাকতেন কোপে আহত দুই মেয়ের জননী। তার পৈতৃক বাড়ি ভৈরবের পঞ্চবটিতে।
ঢামেকের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি নারীর বড় বোন নিউজবাংলাকে জানান, তার ভগ্নিপতি ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী জাহিদ রোজই ইয়াবা সেবন করেন। ইয়াবা কিনতে নিয়মিতই তার বোনের কাছে টাকা চান তিনি। এ নিয়ে এ দম্পতির মধ্যে কলহ চলছিল।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইয়াবার টাকা চাওয়া নিয়ে জাহিদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় তার স্ত্রীর। এর একপর্যায়ে জাহিদ ঘরে থাকা বঁটি দিয়ে স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে গুরুতর আহত হন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
বড় বোন আরও জানান, বোনকে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলা রাখার খবর পেয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। শুরুতে তাকে ভর্তি করান স্থানীয় একটি হাসপাতালে। সেখানে থেকে রেফার করায় রাত দেড়টার দিকে ঢামেকের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান তাকে। ঢামেকের চিকিৎসক অন্তঃসত্ত্বাকে ২০৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তির নির্দেশ দেন।
ঢামেকে ভর্তির পরের দিন দুপুরে অস্ত্রোপচারে গৃহবধূর মৃত সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় বলে জানান তার বড় বোন।
তিনি জানান, নবজাতকের মরদেহ শুরুতে রাখা হয় মর্গে। তার ময়নাতদন্ত হয় শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে। রোববার তার দাফন হয় আজিমপুর কবরস্থানে।
কেমন আছেন আহত নারী
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বড় বোন জানান, আহত নারীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার মুখ ফুলে গেছে।
তিনি আরও জানান, তার বোনকে এক সপ্তাহের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ শেষে ফের অস্ত্রোপচার করা হবে।
স্বামী গ্রেপ্তার
গুরুতর আহত নারীর বোন জানান, ঘটনার পরপরই তার ভগ্নিপতি জাহিদকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয় লোকজন। পরে শুক্রবার রাতে ভৈরব থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা। সে মামলায় জাহিদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, গৃহবধূর অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।