চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত সাইফুল নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার বিকেলে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকা থেকে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) আবছার।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় শনাক্ত ছয়জনের চারজনকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে সাইফুল নামে দুজন পলাতক ছিল। দুজনের মধ্যে একজনকে নগরীর বহদ্দারহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
এর আগে শনিবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ছয়জন শনাক্ত ও চারজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন।
যেভাবে যৌন নিপীড়ন
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক বলেন, ‘অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, সেদিন রাত ১০টা-সাড়ে ১০টার দিকে ওই ছাত্রী তার এক ছেলে বন্ধুসহ হলের দিকে ফিরছিলেন। আজিম ও তার গ্রুপটি মোটরসাইকেল নিয়ে রাতে ঘোরাঘুরি ও আড্ডা দিতে থাকে। মোটরসাইকেল দুটি ছিল সাইফুল ও শাওনের। ঘোরাঘুরির সময় হঠাৎ তাদের নজরে আসে, একটি ছেলে ও একটি মেয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের দিক থেকে হেঁটে আসছে, জায়গাটি একটু নির্জন।
‘শুরুতে তারা গিয়ে ভুক্তভোগীদের চার্জ করেন। ছাত্রীর ছেলে বন্ধুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন না। অভিযুক্তরা তাদের কাছে গিয়ে এত রাতে বাইরে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করেন। ছেলে বন্ধুর কাছে দাবি করা হয় চাঁদা। একপর্যায়ে তাদের মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়।
‘তখন তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরে ছয়জন তাদের ওপর আরও বেশি চড়াও হয়। ছেলেটিকে আটকে রেখে মেয়েটিকে তারা নির্যাতন করে। প্রথমে চড়থাপ্পড় মারে, তারপর বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের চেষ্টা করে।’
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ ও টাকা-পয়সা নিয়ে নেয়ার পর তারা (জড়িতরা) ঘটনাস্থল ত্যাগ করে জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘তখন ভুক্তভোগীরা একটি হলে গিয়ে এক ছাত্রের মোবাইল থেকে ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিযোগ জানায়।’
ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত না দাবি করে তিনি বলেন, ‘এখানে আমরা কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাইনি। যার নেতৃত্বে ঘটনা ঘটেছে, আজিম, সে অকপটে বলেছে, ঘটনাটি ঘটেছে তাৎক্ষণিক। কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছিল না বা মেয়েটিকে টার্গেট করার কোনো প্ল্যান ছিল না। এমনকি মেয়েটিও আমাদের বলেছে, সে আজিমকে আগে থেকে চিনত না।’
আজিমের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজিম যেহেতু এলাকায় অবস্থান করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, এই কারণে এলাকায় তার প্রভাব ছিল। এই প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটিয়ে সে হয়তো ছোটখাটো কিছু ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জেনেছি। এগুলো তদন্ত করে আমরা বের করব।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত সবাই বলছে তারা ছাত্রলীগ সমর্থন করে। সমর্থন তো যে কেউ করতে পারে। কিন্তু তাদের কোনো পদ-পদবি নেই। তারা যেটা বলছে যে, তাদের মধ্যে দুই গ্রুপেরই সমর্থক রয়েছে। এখানে নির্দিষ্ট কোনো গ্রুপের কেউ না।
‘তাদের ভাষ্য অনুযায়ী একেক জন একেক গ্রুপ সমর্থন করে। সমর্থন করা মানেই আমি বলতে পারি না যে, তারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সমর্থন তো যে কেউ করতে পারে, জনসাধারণ হিসেবে তার অধিকার রয়েছে।’