নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার একটি হিন্দু পরিবারের ওপর তুচ্ছ কারণে হামলা হয়েছে। এতে পরিবারটির এক নারীসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার বিকেলে এ হামলার ঘটনা ঘটলেও প্রতিপক্ষের ভয়ে শনিবার বিকেল পর্যন্ত পরিবারটি থানায় মামলা দিতে যায়নি।
বারহাট্টা থানার ওসি লুৎফুল হক হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।’
হামলার শিকার পরিবারটির আহত সদস্যরা হলেন উপজেলার আসমা ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের মানিক সেন, অমল সেন ও মানিকের স্ত্রী সেতু রানী সেন। নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে তারা এখন চিকিৎসাধীন।
বাঘমারা গ্রামের শ্যামল সেন জানান, শুক্রবার সকালে প্রতিবেশী বকুল মিয়ার ভাগনে বিল্লাল মিয়া শিশুদের মধ্যে ঝগড়ার জেরে অমল সেনের আট বছরের মেয়ে হিয়া সেনকে চড় মারেন। এটি শোনার পর অমল সেন মেয়েকে চড় দেয়ার কারণ জানতে চাইলে বিল্লালের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়।
এর জেরে শুক্রবার বিকেলে বকুল মিয়া ও তার তিন ছেলে রিপন, টিটু, ইকবাল মিয়াসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পরিবারটির ওপর হামলা চালায়।
হামলাকারীরা অমল, তার ভাই মানিক ও মানিকের স্ত্রী সেতু রানী সেনকে দা দিয়ে কুপিয়ে এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ছাড়া তাদের বসত ও গোয়ালঘরও কুপিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরে স্বজনরা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে রেফার করেন। তাদের প্রত্যেকের মাথা, মুখ ও শরীরের অন্যান্য স্থানে দায়ের কোপসহ গুরুতর আঘাতের জখম রয়েছে।
এদিকে পরিবারটির ওপর শুক্রবার বিকেলে হামলা হলেও শনিবার বিকেল পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি।
শ্যামল সেন বলেন, ‘প্রতিপক্ষের লোকজন খুবই ভয়ংকর এবং সন্ত্রাসীপ্রকৃতির। আমরা অভিযোগ দিতে গেলে তারা আমাদের ওপর আবারও হামলা করতে পারে।’
এ বিষয়ে বারহাট্টা থানার ওসি লুৎফুল হক বলেন, ‘আমরা আহতদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিতে খবর পাঠিয়েছি। পরিবারটিকে আমরা সব ধরনের নিরাপত্তা দেব। এমনকি অভিযোগ পাওয়ার পর দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করব।’
নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে বারহাট্টা থানার ওসিকে মামলা নিতে বলেছি। পাশাপাশি হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে বলেছি।’