বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিষধর সাপ উদ্ধারের পর বনে অবমুক্ত

  •    
  • ২৩ জুলাই, ২০২২ ১৪:০৪

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংগঠনের সভাপতি রাসেল জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকার ঘরে কাজ করার সময় ওই সাপটি এমদাদুলের বাম পায়ের গোড়ালির নিচে কামড় দেয়। এরপর টর্চ লাইট জ্বালিয়ে তিনি সাপটিকে দেখতে পান এবং সেটিকে ধরে ইঁদুরের খাঁচায় বন্দি করে রাখেন।

নেত্রকোণার দুর্গাপুরে একটি সাপ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে, সাপটি গ্রিন পিট ভাইপার প্রজাতির বলে জানিয়েছে পরিবেশ কর্মীরা।

চার ফুট লম্বা সাপটি শুক্রবার রাতে উপজেলার গোপালপুর এলাকার বনে অবমুক্ত করেছে দুর্গাপুরের ‘সেভ দ্য অ্যানিমেলস অফ সুসং’ নামে একটি পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংগঠনের সদস্যরা।

সংগঠনের সভাপতি রিফাত আহমেদ রাসেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রিন পিট ভাইপার নিশাচর সাপ। দিনের বেলা ঘুমিয়ে বা ঝিমিয়ে থাকে। তাই লোকজনের নিরাপত্তার কথা ভেবে এটিকে রাতে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর আগে বুধবার রাতে দুর্গাপুরের চন্দ্রকোনা গ্রামে ধরা পড়ে সাপটি।’

রাসেল জানান, গত বুধবার রাতে চন্দ্রকোনা গ্রামের নিজ বাড়িতে কাজ করছিলেন অটোরিকশার চালক এমদাদুল হক। বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকার ঘরে কাজ করার সময় ওই সাপটি তার বাম পায়ের গোড়ালির নিচে কামড় দেয়। এরপর টর্চ লাইট জ্বালিয়ে তিনি সাপটিকে দেখতে পান এবং সেটিকে ধরে ইঁদুরের খাঁচায় বন্দি করে রাখেন।

সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা তাকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে একদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হন তিনি।

তিনি আরও জানান, সাপ আটকে রাখার খবর পেয়ে সেভ দ্য অ্যানিমেলস অফ সুসংয়ের কর্মীরা সাপটিকে উদ্ধার করেন। পরে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে তারা সাপটিকে দুর্গাপুরের গোপালপুর বনে অবমুক্ত করেন। এ সময় ওই সংগঠনের সদস্যরা ছাড়াও স্থানীয় বনবিভাগের কর্মচারী ফারুক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

পরিবেশকর্মী রাসেল বলেন, ‘গ্রিন পিট ভাইপার একটি বিপন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ। এর আগে দুর্গাপুর এলাকায় কখনও এ প্রজাতির সাপ দেখা যায়নি। তবে কয়েকদিন আগে দুর্গাপুরে একই প্রজাতির আরও একটি সাপ উদ্ধার করা হয়েছিল। সবুজ রংয়ের এ সাপটিকে কোথাও কোথাও সবুজ বোড়া সাপ বলা হয়। আবার দেখতে খুব সুন্দর হওয়ায় কেউ কেউ বলে সুন্দরী সাপ। এদের চোখের নিচের দুপাশে পিট (গর্ত) থাকে। তাই এটিকে গ্রিন পিট ভাইপার বলা হয়।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান জানান, গ্রিন পিট ভাইপার আমাদের দেশে নেই।

তিনি বলেন ‘এই সাপটি সাদা ঠোঁট সবুজ বোরা বা ইংরেজিতে white-lipped pit viper। সাধারণত সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সুন্দরবনে এদের বসবাস। নেত্রকোণায় সাদা ঠোঁট সবুজ বোরা সাপ উদ্ধারের ঘটনা বিরল।

ড. কামরুল হাসান আরও বলেন ‘বিষাক্ত এই সাপটি নিশাচর। তাপ-সংবেদী অঙ্গের কারণে (thermo-sensitive pit organ) ঘুটঘুটে অন্ধকারে খুব সহজেই চলাচল ও শিকার ধরতে পারে। এর ধীর গতির, শিকারের জন্য একই স্থানে টানা সাতদিনও অপেক্ষা করতে পারে।’

এর আগে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ভাড়াউড়া চা বাগানের একটি বাংলো থেকে এই প্রজাতির সাপ উদ্ধার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রশিক্ষক ও সহকারী সাপ গবেষক বোরহান বিশ্বাস রমন বলেন, ‘ভাইপারের বিষ হচ্ছে হেমোটক্সিন। দেশে এই বিষের এন্টি ভেনম নেই। তাই সাধারণত চিকিৎসা করা হয় এন্টিবায়েটিক দিয়ে। এদের বিষ পেশি কোষ এবং রক্তকণাকে ভেঙ্গে দেয়। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে আক্রান্তের প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যায়। তবে সময়মত চিকিৎসা পেলে ভয়ের কিছু নেই।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী জানান, ভাইপার বিষধর সাপ। এটি vipreidae গোত্রের। এ গোত্রের crotalinae উপগোত্রে রয়েছে পিট ভাইপার। বাংলায় এ সাপকে বলা হয় সবুজ বোড়া। এরা দুই ফুটের মতো লম্বা হয়। চ্যাপ্টা মাথাটি ত্রিকোণাকার। ধীরে চলাফেরা করা এই সাপ ব্যাঙ,পাখি, ইঁদুর খেয়ে বেঁচে থাকে।

এ বিভাগের আরো খবর