সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নেয়া দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘সেই জাতীয় সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সব সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানে এগিয়ে যাবে।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে দলটির মিডিয়া সেলের উদ্যোগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে দলের এমন অবস্থানের কথা জানান মির্জা ফখরুল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চলমান রাজনৈতিক সংলাপে বিএনপিকে ডাকলেও তাতে সাড়া দেয়নি দলটি। বরং নির্দলীয় সরকারের দাবিতে অনড় থেকে দলটি এবার জাতীয় সরকার গঠনের ঘোষণা দিল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে জয়ী হতে পারলে এতে অংশগ্রহণকারী সব দল নিয়ে আমরা জাতীয় সরকার গঠন করব। সেই জাতীয় সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে সব সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানে এগিয়ে যাবে। সে পথেই জনগণের মুক্তি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার, ‘ব্যর্থতা ও অপকর্মের দায় নিয়ে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন ও সেই সরকারের অধীনে সংসদ গঠন করতে হবে।’
শুধু বিএনপি নয়, পুরো জাতি আজ এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও মনে হচ্ছে আসলে কি আমরা স্বাধীন দেশ বিনির্মাণ করতে পেরেছি? এখন যারা ক্ষমতায় আছে সেই ফ্যাসিস্ট সরকার সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে জোর করে ক্ষমতায় আছে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি আজ কঠিন সঙ্কটে। করোনাকালে ভঙ্গুর অর্থনীতি কার্যকর রাখতে আমরা বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু সরকার তাতে কান দেয়নি। ফলে এখন অর্থনীতির ভয়াবহতা ফুটে উঠছে।
‘বিদুৎ উৎপাদনের নামে কুইক রেন্টালের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি চলছে, যা জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।’
মেগা প্রজেক্ট দিয়ে জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি সামগ্রিক ধ্বংসের দিকে যাত্রা করেছে।
‘দল-মত বা কোনো ব্যক্তি-গোষ্ঠী নয়, সবাইকে এই সরকারের কাছে জবাব চাইতে হবে। জানিয়ে এই সরকারের জবাবদিহিতার জায়গা নেই। কারণ তারা নির্বাচিত নয়। তাদের লক্ষ্য একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতে ২০১৮ সালের মতো আগামীতে আরেকটি নির্বাচন করা।’
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, বিএনপির মিড়িয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী।