ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্বর্ণ ছিনতাইয়ের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশের এএসআই বাবুল হোসেনকে এক দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে তিনি স্বর্ণ ছিনতায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও আদালতে এ বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ৩৫ বছর বছর বয়সী এএসআই বাবুল হোসেন ভাঙ্গা থানায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় গত ৭ জুলাই রাতে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৪০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই করেন। তাকে এ কাজে সহযোগিতা করেন স্থানীয় সহযোগী (সোর্স) ভাঙ্গা পৌরসভার হোগলাডাঙ্গী মহল্লার বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী মেহেদী হাসান।
জানা যায়, নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার কামঠানা গ্রামের অজিৎ বিশ্বাসের ছেলে পাপ্পু বিশ্বাসের যশোর জেলা শহরে স্বর্ণের দোকান রয়েছে। গত ৭ জুলাই রাতে ভাঙ্গা বাজারের সোনার তরী জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী পলাশ বণিকসহ কয়েক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১১০ ভরি স্বর্ণ কেনেন পাপ্পু। স্বর্ণ কিনে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভাঙ্গা বাজারেই তার গতিরোধ করেন ভাঙ্গা থানার এএসআই বাবুল হোসেন ও তার সহযোগী মেহেদী হাসান।
এ সময় পাপ্পুর কাছে থাকা স্বর্ণ অবৈধ দাবি করে তা ছিনিয়ে নেন বাবুল। পরে পাপ্পু তার ব্যবসায়িক কাগজপত্র দেখালে ৪০ ভরি রেখে বাকি স্বর্ণ তাকে ফেরত দেন বাবুল। এ সময় বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য পাপ্পুকে হুমকিও দেন তিনি।
এ ঘটনায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী পাপ্পু বিশ্বাস গত ১৩ জুলাই এএসআই বাবুল ও তার সহযোগী মেহেদীকে আসামি করে ভাঙ্গা থানায় মামলা করেন। পরে ওই দিনই বাবুল ও মেহেদীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লায় এএসআই বাবুলের বাসা থেকে ছিনতাই হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
১৪ জুলাই ‘ছিনতাই মামলায় এএসআই কারাগারে’ শিরোনামে নিউজবাংলায় খবরটি প্রকাশিত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের পর এএসআই বাবুলকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার এসআই গোলাম মুনতাসীর মারুফ দুই আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানান। গত মঙ্গলবার শুনানি শেষে আদালত আসামি বাবুলের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। অপর আসামি মেহেদী হাসানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয়া হয়।
এসআই গোলাম মুনতাসীর মারুফ জানান, বাবুলকে গত বুধবার বিকেলে রিমান্ডে আনা হয়। রিমান্ড শেষে গত বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, রিমান্ড চলাকালীন সাময়িকভাবে বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা স্বর্ণ ছিনতায়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে যেহেতু তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন এবং ছিনতাই হওয়া স্বর্ণ তার জিম্মা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এ জন্য তাকে আর রিমান্ডে আনার জন্য আবেদন করা হবে না।’