বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশি জেলেরা বাড়িতে, জলসীমায় ভারতীয়রা

  •    
  • ২২ জুলাই, ২০২২ ২০:১১

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার মধ্যরাত থেকে সাগরে মাছ ধরতে রওনা হবেন বাংলাদেশি জেলেরা। তবে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দেশি জেলেরা যখন জাল-নৌকা তীরে ভিড়িয়ে বাড়িতে অবসর সময় কাটাচ্ছিলেন, তখন বাংলাদেশি জলসীমায় আটক হয়েছেন দেড় শতাধিক ভারতীয় জেলে।

বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে ভারতীয় জেলেরা অবাধে মাছ শিকার করছে- এই অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন দেশি জেলেরা। কিন্তু তথ্য-প্রমাণের অভাবে মৎস্য অধিদপ্তর এসব অভিযোগ আমলে নেয়নি।

কিন্তু ২০১৯ সালের জুলাইয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভারতীয় জেলেদের জলসীমা অতিক্রমের বিষয়টি নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করলে প্রথমবারের মতো টনক নড়ে মৎস্য অধিদপ্তরের। এ অবস্থায় সমুদ্রে সব ধরনের মাছ ধরায় ভারত ও বাংলাদেশের একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব ওঠে।

এরই ধারাবাহিকতায় এবার দুই দেশ একসঙ্গে সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে- এই নিষেধাজ্ঞার মাঝেই বাংলাদেশি জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের মাছ শিকারের দৌরাত্ম্য দেখা গেছে।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, চলতি নিষেধাজ্ঞার মাঝে গত ২০ দিনে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর চ্যানেলের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকা থেকে দেড় শতাধিক ভারতীয় জেলেকে আটক করেছে নৌবাহিনী। এর মধ্যে গত ২৯ জুন গভীর রাতে বাংলাদেশি জলসীমার ৬৭ থেকে ১১১ কিলোমিটার ভেতরে আটটি ট্রলারসহ প্রথমে ১৩৫ জন ভারতীয় জেলেকে আটক করে মোংলা থানায় হস্তান্তর করা হয়।

মোংলা জোনের বানৌজা গোমতী জাহাজের অধিনায়ক কমান্ডার আরিফ হোসেন জানান, ওই দিন রাতে জাহাজ নিয়ে তারা গভীর সমুদ্রে টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় দেশের জলসীমায় ভারতীয় ট্রলারগুলোকে শনাক্ত ও ধাওয়া করে আটক করা হয়।

এ ছাড়া গত ১৯ জুলাই রাতে একটি ট্রলারসহ ভারতীয় ১৬ জেলেকে আটক করে পরদিন সন্ধ্যায় পায়রা বন্দর নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আটক হওয়া ভারতীয় জেলেদের বাড়ি ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গরাজ্যের বলে নিশ্চিত করেন পায়রা বন্দরের নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মমিনুর।

উভয় ঘটনায় বাগেরহাটের মোংলা থানা ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানায় নৌবাহিনী দুটি পৃথক মামলা করলে আটক ভারতীয় জেলেদের বাগেরহাট ও পটুয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতীয় জেলেদের বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ ঠেকাতে আমাদের টহল ব্যবস্থা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।’

তবে এ থেকে পরিত্রাণের জন্য জলসীমায় বাংলাদেশি চেকপোস্টে জনবল বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ী নেতারা।

কুয়াকাটা আলীপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের জেলেরা যখন দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার কাছাকাছি যায় তখন দেখা যায়, ভারতীয় নৌবাহিনীর বড় বড় জাহাজ কীভাবে পাহারা দিচ্ছে। ওই পাহারা ভেদ করে বাংলাদেশের কোনো জেলে শত চেষ্টা করেও ভারতীয় জলসীমায় পৌঁছাতে পারে না। তেমনি আমাদের দেশের নৌবাহিনী আর কোস্টগার্ডও যদি এভাবে পাহারা দেয়- তাহলে অবরোধের সময় ভারতীয় কোনো জেলে আমাদের দেশের জলসীমায় আসতে পারবে না।’

আনসার মোল্লা মনে করেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার ৬৫ দিনের অবরোধ আরোপ করেছে তা ভেস্তে যেতে পারে। মাত্র ২০ দিনে ৯ ট্রলারসহ দেড় শতাধিক ভারতীয় জেলে আটকের ঘটনা তারই ইঙ্গিত বহন করছে।

তিনি বলেন, ‘এ থেকেই বোঝা যায়- নিষেধাজ্ঞার ৬৫ দিনে কী পরিমাণ ভারতীয় ট্রলার বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে গেছে। বিষয়টি আমাদের মৎস্য ব্যবসায়ীদের ভাবিয়ে তুলছে।’

এদিকে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, নিষেধাজ্ঞায় সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। গত দুই বছরের মতো এবারও ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘যে লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সাগরে নিষেধাজ্ঞা জারির পরামর্শ দিয়েছে, সেই লক্ষ্য প্রায় শতভাগই পূরণ হচ্ছে।’

কারণ হিসেবে তিনি জানান, গত দুই বছর সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি ইলিশের উৎপাদনও বেড়েছে। পাশাপাশি ইলিশের ওজন ও আকার আগের তুলনায় বেড়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর