বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বস্তাবন্দি জীবিত কিশোরী উদ্ধার: ধর্ষণ-অপহরণের মামলা

  •    
  • ২১ জুলাই, ২০২২ ২২:০১

উদ্ধার কিশোরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য অজু করতে বের হই। অজু শেষে দেখি চারজন ছেলে আমার সামনে দাঁড়িয়ে। তারা বলে, আমার ছবিগুলো নিতে চাইলে হাত বাড়াতে। হাত বাড়ানো মাত্রই তারা আমাকে টেনে নিয়ে চলে যায়।’

ঠাকুরগাঁওয়ে নদীর পাড় থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় জীবিত কিশোরীকে উদ্ধারের ঘটনায় ধর্ষণ ও অপহরণের মামলা করেছেন ওই কিশোরীর বড় ভাই।

তাতে আসামি করা হয়েছে কিশোরীর স্বামী সাহাবুল ইয়ামিন ও গুলজান বেগম নামে এক নারীসহ চারজনকে। অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

নিউজবাংলাকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি কামাল হোসেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই কিশোরীর ভাই এসে মামলা করেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

টাঙ্গন নদীর পাড় থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়।

১৪ বছরের ওই মেয়ের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায়।

যা ঘটেছিল

উদ্ধারের পর ওই কিশোরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বাড়িতে গুলজান নামের এক নারী ভাড়া থাকতেন। তিনি গোপনে আমার কিছু ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন। আমাকে পাচার করে দেয়ার হুমকিও দিতেন। আমার পরিবারকে বিষয়টি জানালে তাদের পরামর্শে মে মাসের শেষ দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হই।

‘বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য অজু করতে বের হই। অজু শেষে দেখি চারজন ছেলে আমার সামনে দাঁড়িয়ে। তারা বলে, আমার ছবিগুলো নিতে চাইলে হাত বাড়াতে। হাত বাড়ানো মাত্রই তারা আমাকে টেনে নিয়ে চলে যায়। মারধরের একপর্যায়ে তারা আমাকে বস্তায় ঢুকিয়ে ফেলে। তারপর আর কিছু বলতে পারি না।’

ওই মাদ্রাসাছাত্রী বিবাহিত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিন মাস আগে আমার বিয়ে হয়েছে। তবে পারিবারিকভাবে নয়। এ নিয়েও ঝামেলা চলছে। আমি স্বামীর সঙ্গে থাকছি না।’

অপহরণকারীরা তাকে কেন ফেলে গেল জানতে চাইলে কিশোরী বলেন, ‘সম্ভবত কয়েকজন লোক সে সময় আসছিল, তাই ফেলে গেছে।’

মাদ্রাসার এক শিক্ষিকা বলেন, ‘ফজরের নামাজে যখন তাকে পাওয়া যায়নি, তখন তাকে মাদ্রাসার সবখানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। ভোরে জানতে পারি বস্তাবন্দি মরদেহ নদীর ধারে পড়ে আছে। তখনও আমরা জানি না সে আমাদেরই ছাত্রী। পরে একজন ছবি দেখালে আমরা নিশ্চিত হই।’

মাদ্রাসার প্রধান বলেন, ‘তার সঙ্গে কী ঘটছিল তা আমরা জানতাম না। এমনকি সে যে বিবাহিত, সে খবরও গোপন রাখা হয়েছে। আজ তার রুম থেকে একটি চিঠিও উদ্ধার করা হয়েছে।’

কিশোরীর বড় ভাই ও মামলার বাদী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বাসায় ভাড়া থাকতেন গুলজান বেগম। বাড়ি ভাড়া নিয়ে বেশ কয়েকবার আমার মায়ের সঙ্গে তর্কাতর্কিও হয়। তিনি কুপরামর্শ দিয়ে আমার বোনকে গ্রামের সাহাবুল ইয়ামিন নামের এক কিশোরের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। তিনিই ইয়ামিনকে গত রমজান মাসে একদিন সেহেরির পর আমার বোনের ঘরে ঢুকিয়ে দেন।

‘সে সময় পরিবারের লোকজন ইয়ামিনকে আটক করলে পরে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় তার সঙ্গে আমার বোনের অ্যাফিডেভিট করে বিয়ে হয়।’

কিশোরীর ভাই আরও জানান, বিয়ের পর থেকে ইয়ামিনের পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল। গুলজান তার বোনের ব্যক্তিগত ছবি সংগ্রহ করে সেগুলো দেখিয়ে হুমকি দিতেন। অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বোনের বিয়ের খবর গোপন রেখে তাকে বাড়ি থেকে দূরে রাখার জন্য মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়।

এসব ঘটনার জেরেই গুলজান, ইয়ামিন ও ইয়ামিনের বাবা-মা মিলে তার বোনকে অপহরণ করে বলে অভিযোগ করেন বড় ভাই।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের চিকিৎসক মো. শিহাব জানান, কিশোরীর চিকিৎসা চলছে। সে এখন সুস্থ আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর