দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে পাওয়া মতামত সরকারের কাছে পৌঁছে দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সংবেদনশীল যে কোনো উপযুক্ত প্রস্তাব গ্রহণের মানসিকতা সরকারের রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৃহস্পতিবার গণফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসে এমন মন্তব্য করেন সিইসি।
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনে আমাদের এখানে ব্যাপক সহিংসতা হচ্ছে। ভোটে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকেও সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে হবে। জনপ্রশাসনকে বিরাজনীতিকরণ করতে হবে অন্তত নির্বাচনের সময়ে।’
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মাঠে বড় বিতর্ক চলছে উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দলগুলোর বার্তা সরকারের কাছে পৌঁছে দেবো। এটা নিয়ে রাজনৈতিক সংলাপ প্রয়োজন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসতে পারে রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে।
‘আমি বিশ্বাস করি নির্বাচনের স্বার্থে সংবেদনশীল যে কোনো উপযুক্ত প্রস্তাব গ্রহণের মানসিকতা যে কোনো দায়িত্বশীল সরকারের থাকবে।’
সিইসি বলেন, ‘এ পর্যন্ত সংলাপে যতগুলো প্রস্তাব পেয়েছি তার মধ্যে বেশকিছুই অভিন্ন। অস্ত্র শক্তি, অর্থের শক্তি, পেশি শক্তি- এগুলোর কিছু সংকট আছে। আমাদেরকে এগুলো ওভারকাম করতে হবে।’
নির্বাচন পরিচালনায় কমিশনের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে বা আছে বলে মন্তব্য করেন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান। তিনি বলেন,‘ নির্বাচনকালীন সরকারকে নিরপেক্ষ থেকে কমিশনকে সহায়তা করতে হবে। সেটা সরকারের সাংবিধানিক সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব হবে। কমিশন তার ক্ষমতা সংবিধান, আইন ও বিধি-বিধানের আলোকে প্রয়োগ করবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনে নির্বাহী সব কর্তৃপক্ষকে কমিশনের আদেশ ও নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।’
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন বিতর্কিত হয়ে জনপ্রত্যাশাকে ভূলুণ্ঠিত করলে কার কী দায় হবে তা কেবল গন্তব্যই বলতে পারে। আমরা আমাদের সদিচ্ছা ব্যক্ত করছি। কোনো অপশক্তির চাপে মাথানত না করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। সংসদ নির্বাচন একটি কঠিন ও ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। সবার আন্তরিক ও সমন্বিত প্রয়াস থাকলে এমর কঠিন কর্মযজ্ঞ সাধন অসাধ্য নয়।’
গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান মো. জাকির হুসেনের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়। চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৬টি দলের সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা ছিল। তবে বিএনপি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও কল্যাণ পার্টি ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি।