বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রনির ছয় দফা: নিজেদের পক্ষে সাফাই গাইল মন্ত্রণালয়

  •    
  • ২১ জুলাই, ২০২২ ১৯:১৩

রেলপথ মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘অনলাইন বা কাউন্টার টিকিটিংয়ে দেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার রাখা রয়েছে। টিকিট প্রাপ্যতা সাপেক্ষে যেকোনো নাগরিক রেলওয়ে নির্ধারিত পদ্ধতি মেনে টিকিট কিনতে পারে। রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে টিকিট বৈষম্যের কোনো সুযোগ নেই।’

রেলের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। ছয় দফা দাবিতে রেলের মহাপরিচালককে তার দেয়া স্মারকলিপির জবাবে নিজেদের পক্ষে সাফাই গেয়ে জবাব দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

তবে একজন ব্যক্তি যেন বিভিন্ন নামে ও পরিচয়ে টিকিট কেনার সুযোগ না পান, সে জন্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে চুক্তি করে টিকেটিং ব্যবস্থাপনায় জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফাই করার প্রক্রিয়া চালুর কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়টি।

লোকবল সংকটে যাত্রীসেবা বিঘ্নিত হলেও নিয়োগ জটিলতা কেটে যাওয়ায় এই সংকট দীর্ঘ হবে না বলেও আশা তাদের। আর দেশের যেকোনো নাগরিক রেলওয়ের পদ্ধতি মেনে টিকিট কিনতে পারে জানিয়ে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে বৈষম্যের কোনো সুযোগ নেই।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

রেলওয়ের টিকিট ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রেলওয়ের কম্পিউটারাইজড টিকেটিং ১৯৯৪ সাল থেকে চালু হয়। প্রাথমিকভাবে ২৭টি স্টেশনে স্ট্যান্ড অ্যালোন সিস্টেমে টিকেটিং চালু হলেও বর্তমানে ৮৩টি স্টেশনে টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘সহজ লিমিটেড বাংলাদেশ ও সিনেসি আইটির যৌথ উদ্যোগে (জেভি) বর্তমানে রেলওয়ের টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রীদের টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে।

‘টিকিট ইস্যুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দিয়ে নিয়মিত মনিটর করা হয় এবং যাত্রী হয়রানির কোনো অভিযোগ রেলওয়ের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত হলে তা তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।’

যাত্রীসেবায় দেশের নাগরিকদের কাছে নিজেদের দায়বদ্ধ জানিয়ে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘যদি রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমের উন্নয়নে সুস্পষ্ট অভিমত, মতামত বা সুপারিশ পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ে তা বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা নেবে।’

মহিউদ্দিন রনি ছয় দফার মধ্যে ছিল টিকিট কালোবাজারি। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়েতে টিকিট কালোবাজারির বিরুদ্ধে নানা কার্যক্রম চলমান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। টিকিটের ওপর যাত্রীর নাম, এনআইডি নাম্বার, বয়স ও জেন্ডার উল্লেখ থাকে যাতে একজনের নামে কেনা টিকিটে অন্যজন ভ্রমণ করতে না পারে।

এ ছাড়া অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সাত দিনে সর্বোচ্চ দুবারের বেশি যাতে রেলওয়ের টিকিট কিনতে না পারে সেই ব্যবস্থা রাখা আছে বলেও দাবি রেল মন্ত্রণালয়ের।

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘রেলওয়ের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ফি জমা দেয়া হয়েছে। অচিরেই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের এ-সংক্রান্ত চুক্তি সই হবে। চুক্তি সইয়ের পর রেলওয়ের টিকেটিং ব্যবস্থাপনায় জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফাই করার প্রক্রিয়া চালু হয়ে যাবে। যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির বিভিন্ন নামে বা বিভিন্নভাবে টিকিট কেনার সুযোগ বন্ধ হবে।’

রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে অনলাইন কোটার টিকিট ব্লক করার বা টিকিট বুকিং করার কোনো সুযোগ নেই বলেও দাবি করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

এতে বলা হয়, ‘অনলাইন বা কাউন্টার টিকেটিংয়ে দেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার রাখা রয়েছে। টিকিট প্রাপ্যতা সাপেক্ষে যেকোনো নাগরিক রেলওয়ে নির্ধারিত পদ্ধতি মেনে টিকিট কিনতে পারে। রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে টিকিট বৈষম্যের কোনো সুযোগ নেই।’

ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে ঢাবি শিক্ষার্থী রনি যে অভিযোগ এনেছেন, তা নিয়েও বক্তব্য দিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত ২১৮টি। আর বর্তমানে রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা ৩৬৬টি।

এ ছাড়া রেলওয়ের নেটওয়ার্ক ও ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর নানা প্রকল্প চলমান জানিয়ে বলা হয়েছে, শিগগিরই আরও ১৬টি জেলা রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে।

রেলে যাত্রীসেবা নিয়ে যে অভিযোগ তুলেছেন মহিউদ্দিন তার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় বলছে, নিয়োগ আটকে থাকায় লোকবল সংকটের কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। তবে লোকবল নিয়োগে জটিলতা কেটে যাওয়ায় সেই সংকট দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলেও আশাবাদী তারা।

এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ রেলওয়েতে বর্তমান জনবল কাঠামো অনুযায়ী টিটিই পদমঞ্জুরি ৩৬৯টি, কর্মরত ১২২ জন, শূন্য ২৪৭টি পদ। টিসি পদমঞ্জুরি ৩৬৩টি, কর্মরত ১১৬ জন এবং শূন্য ২৪৭টি পদ।

‘টিকিট চেকিং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ পদ খালি থাকায় চেকিং কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে বর্তমানে চলমান নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে ট্রেনে মনিটরিং কার্যক্রম আরও সুচারুভাবে করা যাবে।’

ট্রেনে খাবারের মান প্রসঙ্গে মন্ত্রণালের দাবি হচ্ছে, রেলওয়েতে বর্তমান বাজারমূল্যের থেকে কমে খাবারের দাম নির্ধারিত রয়েছে। হ্রাসকৃত ও ন্যায্য মূল্যে খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

আন্তনগর ট্রেনের প্রতিটি কোচে খাবারের মূল্যতালিকা টানানোর পাশাপাশি রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ফোন নাম্বার উল্লেখ থাকে বলেও দাবি করেছে মন্ত্রণালয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘যাত্রী হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেলে অথবা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনাকালীন খাবারের মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করা হলে প্রচলিত নিয়মানুযায়ী ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়।’

বিনা মূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ ও বড় বড় স্টেশনে বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে ৬০টি স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম উচ্চতা বাড়ানো, পরিবেষ্টনীসহ আধুনিকায়নের কার্যক্রম চলমান।

এ বিভাগের আরো খবর