রেলে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত ৬ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। বৃহস্পতিবার কমলাপুর রেলস্টেশনের বাইরে এমন ঘোষণা দেন তিনি। এরপর রনি ও তার সঙ্গীরা স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে অবস্থান নেন।
রেলস্টেশনেই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলেও রনি ও তার সঙ্গীরা এখানে দেড় ঘণ্টার মতো অবস্থান করেন।
কমলাপুর রেলস্টেশন ত্যাগ করার আগে রনি বলেন, ‘আমি এখান থেকে চলে যাচ্ছি। এখানে আমার সঙ্গে থাকা মেয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হয়েছে। শাহবাগে অবস্থান নিয়ে আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
বিকেল সাড়ে ৪টায় কমলাপুর রেলস্টেশনের বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মহিউদ্দিন রনি। পরে স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে গেলে রেলওয়ে পুলিশ তাকে বাধা দেয়। এ সময় রনির সঙ্গে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি হয়। এরপর রনি ও তার সঙ্গীরা টিকিট কাউন্টারের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় রনির হাতে শিকল পরা ছিল।
‘শিকল পরা ছল মোদের শিকল পরা ছল’ গানটি গেয়ে সঙ্গীদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন রনি।
কর্মসূচি শুরুর আগে গণমাধ্যমকে মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘আমার দেয়া ছয় দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যে বক্তব্য দিয়েছে তাতে আমি সন্তুষ্ট নই। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আমার দাবির পক্ষে রায় দিয়েছে। এতে প্রমাণ হয়েছে যে আমার অবস্থান ও দাবি সত্য। সহজ ডটকমের দুর্নীতির কথা আজ সারা দেশের মানুষ জানে।’
মহিউদ্দিন রনি বলেন, ‘রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আমি ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাকে কোনো আশ্বাস দিতে পারেনি। তাই আজ থেকে এখানে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা কর্মসূচি পালন করব। আমরা ভায়োলেন্স চাই না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিগুলো মেনে নিক।
‘আমার ৬টি দাবি। তার মধ্যে একটি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সঙ্গে যুক্ত। আমি চাই রেলের দুর্নীতি নিরসন হোক।’
‘কর্মসূচি নিয়ে আমি এখানেই থাকব, এখানেই ঘুমাব, গান গাইব। এতদিন আমি একা ছিলাম। আজ থেকে আমি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি আমার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য। আমি মনে করি অনেকেই এই কর্মসূচিতে যুক্ত হবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে আজকের ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান করছেন তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
‘দেশের প্রতিটি স্টেশনে যার যে অভিযোগ আছে তা নিয়ে সবাই দাঁড়িয়ে যান। অভিযোগপত্র নিয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রেলভবনের সামনে দাঁড়িয়ে যান। ওইখানে একটা অভিযোগ বক্স তৈরি করুন।’
তিনি বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম তারা প্রধানমন্ত্রীকে আমার দাবিগুলোর বিষয়ে জানাক। কিন্তু তারা প্রধানমন্ত্রীকে জানাচ্ছেন না। কারণ তাতে তাদের দুর্নীতি ফাঁস হয়ে যাবে।'
প্রতিবাদী এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘হাইকোর্ট যেহেতু আমাকে ডেকেছেন আমি অবশ্যই যাব। রেলস্টেশনে ঢুকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রেলের মহাপরিচালক আমাকে ঢুকতে দেননি। আগে আমি তার কাছে একা গিয়েছি। এবার সবাই মিলে যাব।