চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার ঘটনায় আলাদা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
চার দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী সেখানে জড়ো হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এসে তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন।
মানববন্ধনে চবি ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দ ইমন বলেন, ‘আমরা গতকাল যে ৪ দফা দাবি দেয়া হয়েছে সে দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আমরা বিক্ষোভ করেছি। ক্যাম্পাসের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা চাই আমরা। চার কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
মানববন্ধন শেষে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রক্টর অফিসে আসেন এবং সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বেলা ১১টার দিকে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ক্যাম্পাস ও জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
একই সঙ্গে চার দিন পরেও কাউকে শনাক্ত না করার কারণে প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রসায়ন বিভাগের ছাত্রী তাসলিমা খানম পারহা বলেন, ‘যৌন নিপীড়নের ঘটনার চার দিন পার হয়ে গেলেও প্রশাসন এখনও নীরব কেন আমরা এটার জবাব চাই। তারা আগে অভিযুক্তদের বিচার করবে, তারপর বাকি সব। জায়গা জায়গা সিসি ক্যামেরা থাকার পরও এখনও কেন কাউকে শনাক্ত করা যায়নি?’
মোহাম্মদ জাহিদ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা আমাদের বোনকে লাঞ্চনার বিচার চাই। সময় অতিবাহিত হবার পরও প্রশাসন এখনও নিশ্চুপ কেন?দোষীদের শাস্তির দাবিতে এসেছি। আমরা শাস্তি চাই, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না হয়।’
রসায়ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভে অংশ নেন।
বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব প্রশাসনের। প্রতিদিন কোনো না কোনো ঘটনা এখানে ঘটেছে। আপনারা দেখবেন শাটল ট্রেন থেকে শুরু করে এমন কোনো জায়গা নেই শিক্ষার্থীরা লাঞ্ছিত হয় নাই, ছিনতাই হয় নাই।
‘আমরা জেনেছি প্রীতিলতা হলের সামনে এক শিক্ষার্থী শারীরিকভবে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। এর দায় প্রশাসনকে নিতে হবে। ঘটনার চার দিন পার হলেও তারা কাউকে খুঁজে বের করতে পারে নাই। উল্টো তারা হাস্যকর সমাধান বের করেছেন। এই ঘটনাগুলো বন্ধ করতে ছাত্রীদের হলে থাকতে হবে, এই সমাধান বের করেছেন তারা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা গতকালের চার দফার সঙ্গে একমত। এগুলো অবিলম্বে চার কার্যদিবসের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।’
শাখা ছাত্র ফন্টের সদস্য শাহানাজ মুন্নি বলেন, ‘আমরা যে ২১০০ একর নিয়ে গর্ব করি সে গর্ব আজ কোথায় গেল? আমাদের গর্বের জায়গায় যদি প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা বিধান করতে না পারে তাহলে এই ২১০০ একর নিয়ে গর্ব আমরা কেন করব?’