ঠাকুরগাঁওয়ে নদীর পাড় থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় এক জীবিত কিশোরীকে উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। টাঙ্গন নদীর পাড় থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
১৪ বছরের ওই কিশোরীর বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায়।
ঠাকুরগাঁওয়ের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উদ্ধার কিশোরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বাড়িতে গুলজান নামের এক নারী ভাড়া থাকতেন। তিনি গোপনে আমার কিছু ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন। আমাকে পাচার করে দেয়ার হুমকিও দিতেন। আমার পরিবারকে বিষয়টি জানালে, তাদের পরামর্শে মে মাসের শেষ দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হই।
‘বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য ওযু করতে বের হই। ওযু শেষে দেখি চারজন ছেলে আমার সামনে দাঁড়িয়ে। তারা বলে, আমার ছবিগুলো নিতে চাইলে হাত বাড়াতে। হাত বাড়ানো মাত্রই তারা আমাকে টেনে নিয়ে চলে যায়। মারধরের এক পর্যায়ে তারা আমাকে বস্তাতে ঢুকিয়ে ফেলে। তারপর আর কিছু বলতে পারি না।’
ওই মাদ্রাসাছাত্রী বিবাহিত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিন মাস আগে আমার বিয়ে হয়েছে। তবে পারিবারিকভাবে নয়। এ নিয়েও ঝামেলা চলছে। আমি স্বামীর সঙ্গে থাকছি না।’
অপহরণকারীরা তাকে কেন ফেলে গেল জানতে চাইলে কিশোরী বলেন, ‘সম্ভবত কয়েকজন লোক সে সময় আসছিল, তাই ফেলে গেছে।’
মাদ্রাসার এক শিক্ষিকা বলেন, ‘ফজরের নামাজে যখন তাকে পাওয়া যায়নি তখন তাকে মাদ্রাসার সবখানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। ভোরে জানতে পারি বস্তাবন্দি মরদেহ নদীর ধারে পড়ে আছে। তখনও আমরা জানিনা সে আমাদেরই ছাত্রী। পরে একজন ছবি দেখালে আমরা নিশ্চিত হই।’
মাদ্রাসার প্রধান বলেন, ‘তার সঙ্গে কি ঘটছিল তা আমরা জানতাম না। এমনকি সে যে বিবাহিত, সে খবরও গোপন রাখা হয়েছে। আজ তার রুম থেকে একটি চিঠিও উদ্ধার করা হয়েছে।’
কিশোরীর স্বজনদের দাবি, পরিকল্পিত ঘটনা এটি। আমাদের চোখে সন্দেহভাজন কয়েকজন আছে, যাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের চিকিৎসক মো. শিহাব জানান, কিশোরীর চিকিৎসা চলছে। সে এখন সুস্থ আছে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করছি। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’