বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কয়লা সংকটে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মুখে উত্তরাঞ্চল

  •    
  • ২০ জুলাই, ২০২২ ২০:০৯

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ইয়ার্ডে উত্তোলিত কয়লার মজুত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টনে নেমে এসেছে। এই পরিমাণ কয়লায় বড়পুকুরিয়ার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি চলতি মাস শেষ হওয়ার আগেই থেমে যেতে পারে। আর নতুন কূপ থেকে কয়লা উত্তোলন করতে আরও এক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলিত মজুত কয়লা প্রায় শেষের দিকে। ফলে দেশের একমাত্র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে ধুঁকে ধুঁকে চলছে উৎপাদন।

এ অবস্থায় কয়লার সরবরাহ না পেলে অচিরেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। এতে নজিরবিহীন লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে পারে দেশের উত্তরাঞ্চল।

এদিকে আগামী আগস্টের মাঝামাঝি থেকে বড়পুকুরিয়া খনির নতুন কূপ থেকে কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উত্তোলিত কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ২০০৬ সালে তৎকালীন সরকার কয়লা খনির পাশেই কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করে।

সে সময় ১২৫ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিটে মোট ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। কিন্তু দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৫ সালে আগের দুটি ইউনিটের পাশে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ওই ইউনিট থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিচালনা করছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। বর্তমানে ওই কেন্দ্রের শুধু তৃতীয় ইউনিটই চালু রয়েছে। আর তৃতীয় ইউনিটটি পুরোদমে চালাতে প্রতিদিন ৫ হাজার ২০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ মে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ১৩১০ নম্বর কূপে কয়লার মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় উত্তোলন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ১৩০৬ নম্বর কূপ থেকে উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমানে খনির ইয়ার্ডে উত্তোলিত কয়লার মজুত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মেট্রিক টনে নেমে এসেছে।

মজুত শেষের দিকে হওয়ায় সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ ৫২৫ মেগাওয়াটের বিপরীতে উৎপাদন ২০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে। ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রতিদিন ২ হাজার মেট্রিক টন করে কয়লা ব্যবহার করা হচ্ছে।

কিন্তু দেশে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০০ মেগাওয়াট থেকে উৎপাদন বাড়িয়ে ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন শুরু হয়। এতে প্রতিদিন ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লার ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় ইয়ার্ডে মজুত থাকা কয়লা দিয়ে আর মাত্র ১৫ দিনের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। আর ৫২৫ মেগাওয়াটের ৩টি ইউনিট পুরোদমে চালু করলে মজুত কয়লা দিয়ে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ চলতে পারবে কেন্দ্রটি।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী ওয়াজেদ আলী সরকার বলেন, ‘কয়লা সংকটের ফলে বর্তমানে আমরা খুব খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেকটাই কমিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে ১টি ইউনিট চালু রয়েছে। এতে প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। কিন্তু যে পরিমাণ কয়লা আমাদের কাছে রয়েছে চলতি মাস পাড়ি দেয়ার আগেই তা শেষ হয়ে যেতে পারে।’

ওয়াজেদ আলী জানান, কয়লার মজুত শেষ হয়ে গেলে চলতি মাসের শেষের দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে উত্তরাঞ্চল বিদ্যুৎহীন বা লো-ভোল্ডেজে পড়তে পারে।

এদিকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘পুরাতন কূপে কয়লার মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন কূপে পুরাতন কূপের যন্ত্রপাতি হস্তান্তর ও আনুষঙ্গিক সংস্কার করতে সাড়ে ৩ মাস সময় লাগে। আমরা নতুন কূপে যন্ত্রপাতি বসানোর কাজ পুরোদমে করছি। আগামী আগস্ট মাসের মাঝামাঝি দিকে এসব কাজ শেষ হলে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হবে।’

এ অবস্থায় অন্তত ১৫ দিন ভয়ংকর বিদ্যুৎ সংকট হতে পারে উত্তরাঞ্চলে।

এ বিভাগের আরো খবর