‘ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিদের কাছে জিম্মি। তাই কাউন্টারের সামনে পাঁচ নম্বর সিরিয়ালে দাঁড়িয়েও টিকিট পাইনি।’
ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রেনের টিকিটের কালোবাজারি বন্ধ, অব্যবস্থাপনা, যাত্রী হয়রানি বন্ধ ও আসনসংখ্যা বৃদ্ধির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে এমন অভিযোগ তোলেন ট্রেনের যাত্রী আজমত রানা।
শহরের চৌরাস্তায় জেলার সচেতন নাগরিক ও ভুক্তভোগী রেলযাত্রীরা বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ সমাবেশ করেন।
সমাবেশে আজমত রানা বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রতিবাদ করি। একই সঙ্গে এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন পেপার পত্রিকায় লেখালেখি করি৷ ওই সময়েই আমাকে কাউন্টারের ভেতর থেকে টিকিট দেয়া হয়।’
সমাবেশে রেলের অব্যবস্থাপনা ও টিকিট কালোবাজারির বিরুদ্ধে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে ১৪ দিন ধরে ৬ দফা দাবি নিয়ে অবস্থান নেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনির প্রতিবাদকে সাধুবাদ জানিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন তারা।
সমাবেশে জেলার সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল লতিফ সহজ ডটকমের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলেন, ‘টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে একান্তভাবে আলাপ করে জানতে পারি, সহজ ডটকম তাদের এ কাজে সহযোগিতা করে।
‘টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেটের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে দশ মিনিটের জন্য ওয়েবসাইট ওপেন করে তাদের টিকিট ব্লক করতে সুযোগ করে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে ওই টিকিট কালোবাজারি চ্যালেঞ্জ করেন এই অনিয়ম কখনই বন্ধ হবে না৷ কারণ এখানে রেলের বড় বড় কর্মকর্তারাও জড়িত৷’
সাংস্কৃতিক কর্মী মাসুদ আহম্মেদ সুবর্ণ বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও রেলস্টেশনে টিকিট কালোবাজারির সিন্ডিকেট এত শক্তিশালী যে বারবার প্রতিবাদ করেও এটি রোধ করা যাচ্ছে না। ৫০০ টাকার টিকিট যাত্রীদের জিম্মি করে ১৫০০ টাকায় বিক্রি করছে কালোবাজারিরা৷
‘প্রতিদিন একই ব্যক্তিরা কাউন্টারে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটছেন কিন্তু তাদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ রেল কর্তৃপক্ষ। আমরা এসব অনিয়ম বন্ধ চাই। অন্যথায় কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
এ সময় রাজিউর রহমান নামের একজন বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে আগে কোনো আন্তনগর ট্রেন ছিল না। আমরা ট্রেনের জন্য রেললাইনে শুয়ে আন্দোলন করেছি। এরপর একে একে ৫টি ট্রেন পেয়েছি। কিন্তু এতে যাত্রীদের সুবিধার চেয়ে কালোবাজারিদের সুবিধা হয়েছে বেশি।
‘অনতিবিলম্বে টিকিটের কালোবাজারি বন্ধ না করা হলে আবারও আন্দোলনে নামা হবে। একই সঙ্গে আসনের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।’
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রিজু, প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনসুর আলীসহ অনেকে।