বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ডাকা চলমান সংলাপ প্রত্যাখ্যান করলেও তাদের জন্য অপেক্ষা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান তিনি।
সিইসি বলেছেন, ‘বিএনপির জন্য আমরা ওয়েট করব।’
আর ইসি কেন অপেক্ষা করবে সে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তারা ওয়েট করবে কেন? আমরা তো ফোন দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি সংলাপে যাব না।’
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে গত ১৭ জুলাই থেকে এ মাসের শেষ পর্যন্ত নিবন্ধিত ৩৯ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের সময় নির্ধারণ করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ইসি।
সংলাপের চতুর্থ দিনে বুধবার তিনটি দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি তাদের সময় পরিবর্তন করেছে। পাশাপাশি বিএনপি সংলাপ বর্জন করায় এদিন মাত্র একটি দলের সঙ্গে সংলাপে বসেছে ইসি। চার দিনে ১৪টি দলকে ইসি আমন্ত্রণ জানালেও ডাকে সাড়া দিয়েছে ১১টি রাজনৈতিক দল। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটভুক্ত বাংলাদেশ মুসলিম লীগ এবং কল্যাণ পার্টি ইসির ডাকা সংলাপ বর্জন করে।
যতগুলো পার্টি সংলাপে অংশ নিয়েছে, প্রতিটি দলের মনোভাব ইতিবাচক ছিল বলে মনে করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো নির্বাচন চাই, যাতে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। এই বিষয়টি যেন নিশ্চিত হয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। ছবি: নিউজবাংলা
‘আমরাও বলেছি, সত্যিকার অর্থে এটিই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব যে, প্রতিটি ভোটার যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। এটাই গণতন্ত্রের ভিত্তি। এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
প্রতিটি দলই বলেছে, ঐকমত্যে বিশ্বাস করে- এ কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘ঐকমত্য তো হতেও পারে, নাও হতে পারে। কিন্তু আমরা বলেছি, আমরা আমাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখব। এই বিষয়ে কেউ না করেনি। প্রয়াসটি অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি, ঐক্যটা আমাদের নয়, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে বলেছি, আপনারা ঐক্যের চেষ্টা করুন এবং ঐক্য হলে আমরা আনন্দিত হব। আর আমরা যে দায়িত্ব নিয়েছি, আইন-কানুন এবং সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করার, সেই দায়িত্বটা পালন করে যাব।’
এই সংলাপের মধ্য দিয়ে ইসির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর অনাস্থা দূর হবে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘ইসির প্রতি অনাস্থা সবসময় আছে বা নাই দুটোই জিনিস। আপনারা তো পেপারেই দেখছেন, একটি দলের হয়তো অনাস্থা আছে। আবার আমাদের সঙ্গে বসেছে তাদের প্রত্যেকের আমাদের প্রতি আস্থা আছে।’
এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ইলেকশন কমিশনের ডাকে সাড়া দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ তাদের সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা নাই।’
সমাধান কোন পথে খুঁজছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই রাজানীতির মাঠে আন্দোলনের মাধ্যমেই সমাধান হবে।’