কুমিল্লা-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি রাজি মোহাম্মদ ফখরুল ও দেবীদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছে চেয়ারম্যানের কর্মী-সমর্থকরা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে এ ঘটনায় বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
মহাসড়কের কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া এলাকায় এ সময় মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন দাউদকান্দি চান্দিনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফয়েজ ইকবাল।
তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা ২০ মিনিট ধরে বিক্ষোভ করছে। আমরা শিগগির তাদের বিক্ষোভ শেষ করতে বলেছি। আমরা মহাসড়কে আছি। এখন যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে।’
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন দেবীদ্বার উপজেলার ভানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজি জালাল উদ্দীন ভূইয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা সেদিনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। একজন এমপি কিভাবে একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের গায়ে হাত তোলেন।’
বিক্ষোভের সময় সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হুমায়ূন কবির বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ওপর এমপি রাজি ফখরুল যে হামলা করেছেন, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। নিন্দার অংশ হিসেবে আমরা আজ মহাসড়কে বিক্ষোভ করছি।’
এর আগে গত শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলইডি হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে সভায় কুমিল্লা-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি রাজি মোহাম্মদ ফখরুল ও দেবীদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে।
রাজি মোহাম্মদ ফখরুল এমপি (বাঁয়ে) ও আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত
এমপির কিল-ঘুষিতে আহত উপজেলা চেয়ারম্যান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে কুমিল্লার দেবীদ্বারে ঝাড়ু মিছিল করেছে উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থক নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ ভবনের এলইডি হলে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির বৈঠক চলছিল। সেখানে কুমিল্লা-৪ আসনের এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ছাড়াও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার, দেবীদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদসহ আরও কিছু নেতা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ২১ জুলাই দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হয়।
সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়, সভার শেষ পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ কাউন্সিলর লিস্ট চূড়ান্ত করার প্রস্তাব দেন। এ সময় এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল উত্তেজিত কণ্ঠে আবুল কালাম আজাদকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এই... কিসের কাউন্সিলর লিস্ট?’
একপর্যায়ে তিনি আবুল কালাম আজাদের মাথায় কিল-ঘুষি মারেন। এতে আহত হন উপজেলা চেয়ারম্যান। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সভা শেষ না করেই জেলা নেতারা উঠে আসেন।