ছাত্রলীগের সভাপতি ফ্ল্যাটে থাকতে পারবেন না কেন, সে প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনটির প্রধান আল নাহিয়ান খান জয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এমন প্রশ্ন তোলেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ঢাকায় ২০-৩০ হাজার টাকার একটা বাসা। এটা কি খুব বেশি? কিন্তু আপনারা নিউজ করেন ছাত্রলীগ সভাপতি ৭০ হাজার টাকার ফ্ল্যাটে থাকেন।
‘মানে কী? আমরা কি ফ্ল্যাটে থাকতে পারব না? ছাত্রলীগ করি বলে কি আমরা রাস্তায় নেমে গিয়েছি? নিজের টাকা খরচ করে, না খেয়ে প্রত্যেক নেতা-কর্মী এখানে কাজ করে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করেন। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, ডা. দীপু মনি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক।
আলোচনায় দেয়া বক্তব্যে ছাত্রলীগের মধ্যে অনেকেই খন্দকার মোশতাকের মতো ঘাপটি মেরে বসে আছে বলে অভিযোগ করেন জয়। তিনি বলেন, ‘আপনারা সামনের সারিতেও বসবেন, আবার বের হয়ে সংগঠনকে বিতর্কিতও করবেন, এ ধরনের মনোভাব থেকে সরে আসেন।
‘সংগঠনের নেতৃত্বে আসতে হলে সংগঠনকে বিতর্কিত করতে হবে, এ রকম কোনো কথা নেই। যারা খন্দকার মোশতাকের মতো ঘাপটি মেরে বসে আছেন, সতর্ক হয়ে যান।’
তিনি বলেন, ‘এসব খন্দকার মোশতাকরাই মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের জন্য সাংবাদিক ভাইদের উদ্বুদ্ধ করে। আমরা খবর পেয়েছি, তারা লিখে লিখেও সাংবাদিকদের পাঠায়। এই খন্দকার মোশতাকদের উদ্দেশে বলতে চাই, নেতা হওয়া এত সহজ না।’
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘এখন কোনো কিছু লুকিয়ে রাখা যায় না। আমরা যদি অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করি, সেটা লুকিয়ে রাখার সুযোগ নেই। সেটা সকলেই জানবে, কিন্তু কিছুদিন পরপর শুধু ২০ লাখ, ৩০ লাখ, ১ কোটি টাকা খাইছো—এমন নামসর্বস্ব কথা বলবেন না কেউ।’
ছাত্রলীগে পদবাণিজ্যের অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারলে পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দেন সভাপতি জয়।
তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে দেশ রূপান্তর পত্রিকায় একটা নিউজ দেখেছি, ছাত্রলীগে নাকি কোটি টাকার পদবাণিজ্য হয়। কোটি টাকা এত সহজ নাকি? একজন নেতা-কর্মী কেন কোটি টাকা দিয়ে পদে আসবে।
‘সুতরাং আন্দাজে কথা না বলে প্রমাণসহ কথা বলেন। আপনারা যদি প্রমাণ দিতে পারেন তাহলে আমি এই মুহূর্তে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করব। আন্দাজে কথা বলে সংগঠনকে বিতর্কিত করবেন না।’
সংগঠনের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করছেন দাবি করে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘সংগঠন চালানো এত সহজ না। আমরা দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমরা কোনো না কোনোভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
‘আমি এবং আমার সাধারণ সম্পাদক সারা জীবনের জন্য দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকার লোক না। এই সংগঠন আমাদের কারও নিজস্ব সম্পত্তি না যে, আমরা পদ আঁকড়ে ধরে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করে সংগঠনকে বিতর্কিত করব।’
তিনি বলেন, ‘সংগঠন সংগঠনের গতিতে চলবে। আপনারা সংগঠনকে বিতর্কিত করলে সম্মেলন হয়ে যাচ্ছে, এ রকম কিছু মনে করিয়েন না। নির্দিষ্ট সময়েই আমাদের নেত্রী সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা দেবেন।’
নিজেদের কোনো কর্মকাণ্ডে যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাধাগ্রস্ত হতে না হয়, নেতা-কর্মীদের সেদিকে খেয়াল রাখারও আহবান জানান ছাত্রলীগ সভাপতি।