বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গরমে ডাবের রেকর্ড দাম

  •    
  • ১৯ জুলাই, ২০২২ ২৩:৩২

শ্রাবণ মাস শুরু হলেও বৃষ্টির দেখা নেই মেহেরপুর ও নওগাঁয়। ভ‍্যাপসা গরম আর তাপ প্রবাহে বেড়েছে তাই ডাবের চাহিদা। সেই চাহিদার কারণেই এই দুটি জেলা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডাবের দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ৫০ টাকার ডাব এখন প্রকারভেদে ১২০ থেকে শুরু করে ১৫০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর সরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত চাচাতো বোনকে দেখতে এসেছেন কাজিপুর গ্রামের মামুন। তিনি দোকানিকে চারটি ডাব দিতে বলে দাম দেয়ার সময় পড়েছেন বিপাকে। চারটি ডাবের দাম দিতে হয়েছে ৫২০ টাকা। অথচ তিনি এক সপ্তাহ আগেও ৫০ টাকা দরে একাধিক ডাব কিনেছেন। আর বতর্মান দরে একেকটির দাম পড়ছে ১৩০ টাকা!

এ অবস্থায় দোকানিকে মামুন জিজ্ঞেস করলেন, ‘ডাবের দাম এত বেশি কেন?’

দোকানি জবাব দিলেন, ‘গাছে ডাব তেমন পাওয়া যাচ্ছে না।’

স্কুল শিক্ষক শাহিন আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুইদিন আগে মেহেরপুরে একটি ডাব কিনেছি ১৩০ টাকায়। এই জেলায় অতীতে এত দাম দিয়ে কখনও ডাব কিনে খাইনি। আসলে আমরা মধ‍্যবিত্তরা যা-ই কিনতে চাই তারই দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়।’

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের সামনে ডাব বিক্রেতা এনামুল হক বলেন, ‘আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাছ থেকে ডাব পাড়ি। চার পাঁচ বছর আগেও একেকটি গাছ থেকে আমরা ৬০-৭০টি করে ডাব পেড়েছি। অথচ এখন ৬-৭টি গাছ থেকেও তা পাওয়া যাচ্ছে না। আগে ১০০টি ডাব কিনতে আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা লাগলেও এখন কিনতে হচ্ছে ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায়।’

দেবিপুর গ্রামের ডাব ব‍্যবসায়ী ইদ্রিস আলী জানান, ২০ বছর ধরে ভ‍্যানে করে তিনি ডাব বিক্রি করেন। আগে প্রায় প্রতি বাড়িতেই ডাব ছিল। কিন্তু এখন ডাবই পাওয়া যাচ্ছে না। আর পেলেও দাম বেশি।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন জানান, বতর্মানে গাছে ডাব কম হওয়ার অন‍্যতম কারণ হলো প্রাকৃতিক পরিবর্তন। তা ছাড়া গাছের সঠিক পরিচর্যার অভাবেও ডাব কম ধরে।’

এদিকে, দাম বেড়ে যাওয়ায় ডাব কিনতে সাহস পাচ্ছে না নওগাঁ শহরের বাসিন্দারাও।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের তাজের মোড়, দয়ালের মোড়, মুক্তির মোড়, বাটার মোড়, কলেজ মোড়, বালুডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, কোর্ট এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ডাবের চাহিদা বেড়ে গেছে। গরমে স্বস্তি পেতে বাধ্য হয়ে অনেকে বেশি দামেই ডাব কিনে খাচ্ছেন। আকার ভেদে প্রতিটি ডাব ১০০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে এত দাম দিয়ে ডাব কিনে খাওয়ার অভিজ্ঞতা নেই বলে জানান শহরের বাসিন্দারা।

দয়ালের মোড়ে ডাব কিনতে এসে পথচারী সাইমুম হোসেন বলেন, ‘খুব রোদ ও গরম। ভাবলাম একটি ডাব কিনে খাই। মাঝারি আকারের একটি ডাব ১০০ টাকা দিয়ে কিনতে হলো। এক মাস আগেও একেকটির দাম ছিল ৬০-৭০টাকা।’

একই মোড়ে ডাব বিক্রেতা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘তীব্র গরমে ডাবের পানির চাহিদা বেড়ে গেছে। এজন্য চাষিদের কাছে থেকে একটু বেশি দামে ডাব কিনতে হচ্ছে। প্রতিটি ডাবে আমরা মাত্র ১০-১৫ টাকা করে লাভ করছি।’

মুক্তির মোড়ের ডাব বিক্রেতা কালাম হোসেন জানান, নওগাঁ শহরে প্রায় শতাধিক ডাবের দোকান রয়েছে। সবখানেই ডাবের দাম প্রায় একই রকম।

ডাবচাষী মনির হোসেন বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার ডাবের ফলন কম হয়েছে। কম হওয়ায় চাহিদাও বেড়েছে। বিক্রেতারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডাব সংগ্রহ করছেন। ডাবের দামও ভালো পেয়েছি।’

নওগাঁ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, ‘ডাবে অতিরিক্ত দাম নেয়ার বিষয়টি আমরা মনিটরিং করবো। বিক্রেতাদের ভাউচার দেখবো। দাম বেশি নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

নওগাঁ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. আশিষ কুমার সরকার বলেন, ‘তীব্র গরম ও তাপদহে ক্লান্তি, অবসাদ দূর করতে এবং পানি শূন্যতা প্রতিরোধে ডাবের পানি কার্যকর ভূমিকা রাখে। ডাবের পানিতে চারটি কলার সমান পটাসিয়াম ও প্রাকৃতিক শর্করা আছে। ডাবের পানি শরীরকে সতেজ করে ও শক্তির যোগান দেয়।

এ ছাড়াও ডাবের পানিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম যা হাড়কে মজবুত করে। ডাবের পানি হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করাসহ বেশ কিছু গুনাগুন রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর