সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যে-ই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক।
মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে নড়াইলের লোহাগড়ার দিঘলিয়ায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির, বাড়িঘর পরিদর্শনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এটি কঠোর অপরাধ। সম্প্রীতি বিনষ্টে যে-ই অপরাধী হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী চক্র দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে অগ্নিসংযোগ, হামলাসহ নানা অরাজকতা সৃষ্টি করে। তারা দেশকে সব সময় অস্থিতিশীল পরিবেশে রাখতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’
প্রতিমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও মন্দিরের পুরোহিতদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের ভয় পাবার কোনো কারণ নেই। ১৫ জুলাইয়ের ঘটনায় আপনারা যারা ক্ষতির শিকার হয়েছেন, সবাইকে পুনর্বাসন করা হবে। যেসব মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব পুনর্নির্মাণ করা হবে।’
সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের এমপি আমাদের গর্ব। মাশরাফি দৃঢ়তার সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। তিনি আপনাদের পাশে এসে সাহস জুগিয়েছেন ।’
প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার, অসীম কুমার উকিল, মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা, পংকজ নাথ, পঞ্চানন বিশ্বাস, নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যরা লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় মতবিনিময় সভা হয়।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্টে এক কলেজছাত্রের ফেসবুক আইডি থেকে বৃহস্পতিবার কটূক্তির কমেন্ট করার অভিযোগ ওঠে।
এর জেরে শুক্রবার বিকেলে হামলা চালানো হয় দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ায়।
হামলাকারীরা গোবিন্দ সাহা ও দিলীপ সাহার বাড়ি, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাবার দোকানসহ ১০টির বেশি বাড়ি-দোকান ভাঙচুর করে। একটি বাড়িতে আগুনও দেয়া হয়।
বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি সাহাপাড়া মন্দিরের প্রতিমা, চেয়ার ও সাউন্ড বক্স ভাঙচুর করে।
হামলার ঘটনায় লোহাগড়া থানার এসআই মাকরুফ রহমান রোববার রাতে মামলা করেন। তাতে ২০০ থেকে ২৫০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর বলেন, ‘ঘটনার দিন জনরোষ সৃষ্টি ও হামলার ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিমান্ডে তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। তখন বোঝা যাবে তাদের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল।’
এ নিয়ে হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। ১৬ জুলাই রাতে দিঘলিয়া গ্রামের সালাহউদ্দীন কচি অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলায় তাকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।