কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মৃত্যুর ১৮ মাস ২৪ দিন পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাব আইন উদ্দিনের মরদেহ উত্তোলন করছে সিআইডি।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল কটিয়াদী পৌরসভার বীরনোয়াকান্দি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থান থেকে আইন উদ্দিনের মরদেহটি উত্তোলন করে।
এর আগে মৃত্যুর ১৪ মাস ৮ দিন পর চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি আইন উদ্দিনের প্রবাসফেরত ভাতিজা মো. রফিকুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ জুডিশিয়াল আদালতে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত করতে গিয়ে আদালতের নির্দেশে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহটি উত্তোলন করে সিআইডি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (সিআইডি) এসআই রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জ্যোতিশ্বর পালের উপস্থিতিতে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। মরদেহের সুরতহাল করে ফরেনসিক টেস্টের জন্য পাঠানো হবে। ফরেনসিক টেস্টের প্রতিবেদন আসার পরই মামলার পরবর্তী কার্যক্রম চালানো হবে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর মোটরসাইকেলে করে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিলে যাচ্ছিলেন আব্দুল ওয়াহাব আইন উদ্দিন। এ সময় উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের চারিপাড়া এলাকায় তাকে বহনকারী মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় একটি পিকআপ ভ্যান। এতে গুরুতর আহত হন বর্ষীয়ান ওই রাজনীতিবিদ ও তার চালক সজিব।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেদিন রাতেই ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয় আইন উদ্দিনকে। পরদিন ২৪ ডিসেম্বর তাকে নেয়া হয় পপুলার জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে ২৫ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেয়া হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টায় তার মৃত্যু হয়। পরদিন জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
আব্দুল ওয়াহাব আইন উদ্দিন কটিয়াদী সদর উপজেলার বীর নোয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকা এই ব্যক্তিত্বের মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
মামলার বাদী আইন উদ্দিনের ভাতিজা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চাচা মারা যাওয়ার সময় আমি বিদেশে ছিলাম। বাড়িতে এসে আমি জানতে পারি, তিনি দুর্ঘটনায় মারা গেলেও ওই মোটরসাইকেলচালক সজিব মিয়ার কিছুই হয়নি। আমাদের পরিবারের লোকজনের ধারণা তিনি দুর্ঘটনায় মারা যাননি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্য সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজানো হয়েছে। তাই আমি এই মামলা করেছি।’