কুমিল্লার মুরাদনগরে এক অষ্টাদশীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করে তা ফেসবুক-ইউটিউবে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠে সজিব কুমার দাস নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। পরে প্রতারক ওই প্রেমিককে ২ বন্ধুসহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক মোহাম্মদ ওমর ফারুক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর দুলাভাই মুরাদনগর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও পাঁচজনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন।
প্রতারণায় অভিযুক্ত ১৯ বছর বয়সী প্রেমিক সজিব কুমার দাস মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার বানীজুরি গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র দাসের ছেলে। তার সঙ্গে কারাগারে যাওয়া অপর দুই সহযোগী হলেন- কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রুহুল আমিন ও মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ইসরাফিল হোসেন অয়ন।
পুলিশ ও বাদীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার নগরপাড় গ্রামে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাসাসংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন সজিব। এরই ধারাবাহিকতায় গত দুই বছর ধরে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৩ জুন ওই কলেজছাত্রীকে একটি বাড়ির সিঁড়িতে নিয়ে যান সজিব। সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা সজিবের বন্ধু রুহুল আমিন ও অয়নসহ অজ্ঞাতরা দুজনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে।
একপর্যায়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে সজিব জানান, যদি তার বন্ধুদের টাকা না দিলে ওই অন্তরঙ্গ দৃশ্য ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হবে। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী সজিবের বন্ধুদের হাতে প্রথমে ৭ হাজার টাকা তুলে দেন। পরে গত ২৯ জুন সজিব ও তার বন্ধুরা ভুক্তভোগীকে রাস্তায় আটকে আবারও টাকা দাবি করেন। এ সময় কলেজছাত্রী তার গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন অভিযুক্তদের হাতে তুলে দেন।
গত ১৩ জুলাই সজিব তার ব্যক্তিগত নম্বর থেকে ভুক্তভোগীর মায়ের কাছে ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ভুক্তভোগী তার পরিবারের কাছে ঘটনার আদ্যোপান্ত খুলে বলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ জুলাই বিকেলে পরিবারের লোকজন সজিবকে টাকা নেয়ার জন্য নগরপাড়ের একটি রেস্তোরাঁয় আসতে বলেন। পরে সেখানে এলে ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা অভিযুক্তদের আটক করেন।
এ অবস্থায় পুলিশকে খবর দিলে মুরাদনগর থানার এসআই হামিদুল ইসলাম অভিযুক্তদের আটক করে থানায় নিয়ে যান।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল বারী ইবনে জলিল জানান, আটক হওয়া তিন আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন, পর্নোগ্রাফি আইনে মামলার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।