বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের ব্যাপক দুর্ভোগের জন্য রাশিয়া-ইউক্রেনকে দায়ি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে গণভবনে মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, তারা দুই দেশের মধ্যে চলমান সামরিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমনকি যুক্তরাষ্ট্র সরকারও সে দেশের জনগণকে বার্তা পাঠিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করতে বলছে।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ সবাই দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছে।’
বৈঠকে দেশের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনার করেন সরকারপ্রধান। জানান, আসাম, মেঘালয় এবং অরুণাচল রাজ্যে অতিবৃষ্টির কারণে এটি ঘটেছে।
যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মূল লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য দূর করা এবং এ অঞ্চলের জনগণের দারিদ্রতা দূরীকরণে একসঙ্গে কাজ করা।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সরকার, সশস্ত্রবাহিনী ও জনগণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের আত্মত্যাগের কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে বৈঠকের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই স্পর্শকাতর ছিল এবং এটি এমন এক ত্যাগের প্রতীক যা নতুন প্রজন্মকে দেশকে ভালোবাসতে অনুপ্রাণিত করবে।’
ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে উপস্থাপনাটি অত্যন্ত সুন্দর ছিল, যেন ইতিহাসে ভ্রমণের মতো।’
দুই প্রতিবেশী দেশের শীর্ষ পর্যায়ের সফর দুই বাহিনীর সম্পর্ক সুসংহত করতে ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন মনোজ পান্ডে।
ভারতের বিজয় দিবস উদযাপনের প্রসঙ্গ টেনে জেনারেল মনোজ পান্ডে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানটিতে যোগ দিয়েছেন, যা ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’
ভারতীয় সেনাপ্রধান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘প্রয়াস’-এর প্রশংসা করেন। প্রয়াস একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান যা বহুমাত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের সামগ্রিক বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।