করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার নামে প্রতারণা ও জাল সনদ দেয়ার মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে আসামিদের একজন ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর আইনজীবী ন্যায়বিচার পাননি দাবি করে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন এ মামলায় সাবরিনাসহ আট আসামিকে ১১ বছর করে কারাদণ্ডের রায় দেন।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আসামিদের মোট ১১ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। এটা একটি যুগান্তকারী রায় হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যারা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেছে, মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তাদের এই শাস্তি প্রাপ্য ছিল। সেটাই হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি।’
ডা. সাবরিনার আইনজীবী প্রণব কান্তি ভৌমিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ডা. সাবরিনা এ মামলায় এজহারভুক্ত আসামি না। তাকে ডেকে নিয়ে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, সেগুলোর একটা অভিযোগও রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি।
‘ডা. সাবরিনা টাকা নিয়েছে কারও কাছ থেকে? কিংবা কাউকে টাকা দিতে বলেছে? বা কোনো করোনা সার্টিফিকেটে ডা. সাবরিনা স্বাক্ষর করেছে্ন? এই ধরনের কোনো ডকুমেন্টস নাই।’
তিনি বলেন, ‘এটি একটি ত্রুটিপূর্ণ রায়। যে ধারায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে, এ ধারায় তাকে কোনোক্রমেই সাজা দেয়ার মেতো কোনো গ্রাউন্ড ছিল না। আমরা ন্যায় বিচার পাই নাই।’
প্রণব কান্তি ভৌমিক বলেন, ‘আমরা এখন উচ্চ আদালতে যাব। আমরা অসন্তুস্ট আজকের রায়ে, আমরা উচ্চ আদালতে যাব। আমরা আপিল করব।’
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই জাল সনদ দেয়ার মামলায় ২০২০ সালের ২৩ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ এরপর ওই বছরের ১২ জুলাই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপারসন ও তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই জেকেজি হেলথকেয়ার ২৭ হাজার মানুষকে রিপোর্ট দেয়। এর বেশির ভাগই ভুয়া বলে ধরা পড়ে। এ অভিযোগে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয়া হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করা হয় এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।