বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধনী-গরিবের আলাদা পানির বিলে সময় লাগবে

  •    
  • ১৯ জুলাই, ২০২২ ০৮:১৩

ওয়াসার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হিসাবটা অনেক জটিল হবে। এখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে জরিপ চলছে। ডেটা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

আর্থিক শ্রেণির ভিত্তিতে গ্রাহকদের ভিন্ন ভিন্ন দামে পানি সরবরাহে ঢাকা ওয়াসা যে চিন্তাভাবনা করছে, তা দ্রুত কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কম। কোন গ্রাহক কোন শ্রেণিতে পড়বেন, সেটি এখনও সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। এর জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জরিপ চলছে।

রোববার ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে এই পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। এতে জানানো হয়, প্রতি হাজার লিটার পানির উৎপাদন ব্যয় ২৫ থেকে ২৬ টাকা। কিন্তু সেটি সরবরাহ করা হয় ১৫ টাকা ১৮ পয়সা দামে। উচ্চ, মধ্য বা নিম্ন আয়ের সবার জন্যই বিল সমান।

নতুন নীতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পানির বিল ১৭ শতাংশ কমানোর বিপরীতে নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য ২৩ শতাংশের কিছু বেশি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। আর মধ্যবিত্ত ও সরকারি সংযোগের ক্ষেত্রে ৬৯ শতাংশ, উচ্চ মধ্যবিত্তদের ক্ষেত্রে ১০৫ শতাংশ এবং উচ্চবিত্তের ক্ষেত্রে ১৪৯ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই নীতিমালা অনুযায়ী নিম্ন আয়ের মানুষ উৎপাদন মূল্যের অর্ধেক দামে আর উচ্চ আয়ের মানুষ দেড় গুণ দামে পানি কিনবেন। মধ্যবিত্ত ও সরকারি সংযোগ পাবে পানির উৎপাদনমূল্যে। নিম্ন মধ্যবিত্তের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশের মতো ভর্তুকি দেয়া হবে, উচ্চ মধ্যবিত্ত উৎপাদন খরচের চেয়ে বেশি দাম দেবে ২৫ শতাংশের মতো।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রাজধানীতে গ্রাহকদের প্রায় ৮০ শতাংশ নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির, ১১ শতাংশ বাণিজ্যিক, ৪ শতাংশ মধ্যবিত্ত শ্রেণির, উচ্চবিত্ত শ্রেণির গ্রাহক ০.৮০ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ গ্রাহক সরকারি সংযোগ এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণির।

তবে কীভাবে এই হার নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি জানানো হয়নি এই পরিকল্পনা ঘোষণার সময়।

ওয়াসা বলছে, পরিসংখ্যান বুরোর তথ্য, হোল্ডিং ট্যাক্স, বাসার স্কয়ার ফিট ও মৌজা চিহ্নিত করে এই পাঁচ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।

কিভাবে শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রথমে এলাকা ধরলাম। ঢাকা শহরে একটা মৌজা রেট আছে, যা এলাকাভেদে ভিন্ন। যার যেমন সক্ষমতা, সে তেমন মৌজা এলাকায় থাকেন। ওই মৌজায় একজন আছেন আলিশান বাসা নিয়ে, একজন আছেন টিনের বাসা নিয়ে। এখানে মৌজা রেট এক হলেও সামর্থ্য এক না। এ জন্য আছে হোল্ডিং ট্যাক্স। এলাকাভেদে হোল্ডিং ট্যাক্সের অনেক ফারাক। জায়গা দামি হলেও বাসা খারাপ থাকার জন্য কম টাকা দিতে হচ্ছে।

‘আবার পরিসংখ্যান ব্যুরোর কাছে উচ্চবিত্ত, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তের সংজ্ঞা আছে। কে কত স্কয়ার ফুটের বাসায় থাকেন, সেটা থেকে নির্ধারণ করা হয়। আড়াই হাজার স্কয়ার ফুটের বাসায় যারা থাকেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর ভাষায় তারা উচ্চবিত্ত। বাসা খিলগাঁওয়ে হলেও তিনি উচ্চবিত্ত।

‘কিন্তু তার মৌজা রেট কম, হোল্ডিং ট্যাক্স কম। কাজেই সব ফ্যাক্টরকে ধরে একটা ইনডেক্স করা হয়েছে। এরপর একটি সফটওয়্যারে এই ইনডেক্স দিয়েই বাকিগুলো পেয়ে যাচ্ছি।’

নিম্ন আয়ের মানুষ চিহ্নিত করা আরও সহজ বলে মনে করেন ওয়াসা এমডি। বলেন, ‘তাদের আমরা সংযোগ দিয়েছি ফ্রি।’

একই বাসায় উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত বাস করেন। সেখানে ফ্ল্যাটের স্কয়ার ফিটও ভিন্ন থাকে। তাহলে তারা কি একই হারে টাকা দেবে?

তাকসিম এ খান বলেন, ‘পরিসংখ্যান ব্যুরোর সংজ্ঞার মধ্যে একটা আছে আয়কর। আবার আমরা তো অনেক ফ্যাক্টরকে ধরেছি।

‘এখানে ঊনিশ-বিশ হবে। উচ্চবিত্তের এলাকায় ভাঙা বাসায় থাকলে সে ক্ষেত্রে ওই বাসার হিসেবে বিল দেবেন। একই জোনে এক রেট না। একই জোনে পাঁচটি ক্যাটাগরির লোকই থাকবে। তারা ক্যাটাগরি অনুযায়ী বিল দেবে।’

কবে নাগাদ এটা বাস্তবায়ন হবে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আরও কয়েকটা স্টেকহোল্ডার মিটিং হবে। তারপর সিদ্ধান্ত হবে।’

এখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। এ জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। যারা গবেষণা করছে, তারা বাসায় গিয়ে মেলাচ্ছে। কোন বাসা কয় তলা, সেটা এখানে লিপিবদ্ধ হচ্ছে।

যারা বেশি টাকা দেবে, তাদের তুলনায় যারা কম দেবে, তাদের সেবার মান ভিন্ন হবে না, এই নিশ্চয়তাও দেন ওয়াসা এমডি। জানান, পুরো সিস্টেম অটোমেশনে চলে যাবে। এর ওপরে কারও হাত থাকবে না। সেবার মান একই থাকবে।

এ বিভাগের আরো খবর