নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় ছাত্রলীগের উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুটি পদ পেতে ৯০ জন প্রার্থী হয়েছেন।
মোহনগঞ্জ উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৪ জন। খালিয়াজুরী ও মদনে প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে ৬৬ ও ৬২ জন করে।
কয়েকটি পৌরসভা এবং কলেজ কমিটিতেও দেখা দিয়েছে এমন রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আওয়াল শাওন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক ইউনিটের কমিটি দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ। নয়া কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা চাঙা হয়েছেন। তাদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তাই প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা একটু বেশি।’
শাওন জানান, গত ১৫ ও ১৬ জুলাই দুদিন জেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন চারটি উপজেলা, তিনটি পৌরসভা ও পাঁচটি সরকারি কলেজ শাখার শুধুমাত্র সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে আগ্রহীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) আহ্বান করা হয়।
এতে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা বিপুল সাড়া দেন। তারা নিজ নিজ এলাকা থেকে মিছিল, মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে এসে জেলা শহরের ছোটবাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন।
জমা পড়া জীবনবৃত্তান্তসমূহ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১২টি ইউনিটের ২৪টি পদের জন্য মোট ৫২৩ জন প্রার্থী হয়েছেন।
এর মধ্যে চারটি উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মাত্র ৮টি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৩০২ জন।
তাদের মধ্যে রয়েছেন: কেন্দুয়া উপজেলায় সভাপতি পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৬৬ জন, মোহনগঞ্জ উপজেলায় সভাপতি পদে ২৭ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৫৭ জন, খালিয়াজুরী উপজেলায় সভাপতি পদে ২০ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৪৬ জন এবং মদন উপজেলায় সভাপতি পদে ২৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৯ জন।
একইভাবে পাঁচটি কলেজ শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মাত্র ১০টি পদেও প্রার্থী হয়েছেন ১৩৯ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন: নেত্রকোণা সরকারি কলেজ শাখায় সভাপতি পদে ২৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৩ জন, মোহনগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজ শাখায় সভাপতি পদে ১১ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মদনের হাজী আব্দুল আজিজ সরকারি কলেজে শাখায় সভাপতি পদে ৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫ জন, কেন্দুয়া সরকারি কলেজে শাখায় সভাপতি পদে ৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জন এবং খালিয়াজুরীর কৃষ্ণপুর হাজী আকবর আলী ডিগ্রি কলেজ শাখায় সভাপতি পদে ৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক ১১ জন।
এদিকে জেলার তিনটি পৌর শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ৬টি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৮২জন। প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, মদন পৌর শাখায় সভাপতি পদে ১৫ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১০ জন, মোহনগঞ্জ পৌর শাখায় সভাপতি পদে ১২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২৭ জন এবং কেন্দুয়া পৌর শাখায় সভাপতি পদে ১০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৮ জন।
নেত্রকোণায় দলীয় কার্যালয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন মোহনগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের মাহমুদ আল নূর সমাপ্ত। ছবি: নিউজবাংলা
মোহনগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী প্লাবন রহমান বলেন, ‘আমি উপজেলা শাখার সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছি। একই পদে আমার সঙ্গে আরও ২৬ জন জমা দিয়েছেন। এত প্রার্থীর ভিড়ে জেলা নেতৃবৃন্দ আশা করি ত্যাগী, সৎ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত সৈনিকদের মূল্যায়ন করবেন।’
বিপুল সংখ্যক প্রার্থী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আওয়াল শাওন বলেন, ‘নেত্রকোনা জেলায় ছাত্রলীগই সবচেয়ে বেশি সুসংগঠিত ও বড় আকারের ছাত্র সংগঠন। এখানে নেতাকর্মীর সংখ্যাও অগণিত, হাজার হাজার। তাই সঙ্গত কারণেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশি। তাছাড়া বেশকিছু ইউনিটের কমিটি দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ। সেসব ইউনিটের পদপদবি পেতে অনেকে বহু আগে থেকে সাংগঠনিক কাজ করে আসছেন। তা ছাড়া আমরা শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য সিভি আহ্বান করলেও অনেকে অন্যান্য পদ পাওয়ার আশাতেও ওই দুটি পদে সিভি জমা দিয়েছেন।’
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান বলেন, ‘বেশি সংখ্যক প্রার্থী হলেও আমরা প্রকৃত ছাত্র, সৎ, ত্যাগী, মেধাবী এবং দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের বাছাই করেই কমিটি গঠন করবো।’