জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনকে নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদকে অসত্য দাবি করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
ভবিষ্যতে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়ে সতর্কও করা হয় সাংবাকিদকের। বলা হয়, ‘অন্যথায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষকবৃন্দের সম্মানের স্বার্থে সমিতি আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।’
সোমবার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সব কথা বলা হয়।
সম্প্রতি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগসমূহের মধ্যে জ্যেষ্ঠতম অধ্যাপক আবুল হোসেনকে দুই বছরের জন্য সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে প্রশাসনিক পদে যোগ দিয়েছেন তিনি। কারণ, শিক্ষক সমিতির ইশতেহারে বলা হয়েছিল, ভোট জিতলে তারা প্রশাসনিক পদ নেবেন না।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, বিভিন্ন পত্রিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটি শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের নজরে আনা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টিকে পরিষ্কার করা প্রয়োজন বলে সমিতি মনে করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক এবং একাডেমিক এ দুই ধরনের পদ রয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, প্রশাসনিক পদ বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন অর্থাৎ উপাচার্য মহোদয়ের এখতিয়ারভুক্ত পদসমূহ কে বোঝায়, যেমন হলের প্রভোষ্ট, প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) পরিবহন প্রশাসক, পরিচালক (গবেষণা) পরিচালক (আইটি) ইত্যাদি।অন্যদিকে ডিন এবং চেয়ারম্যান পদসমূহ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী জৈষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত কোনো পদ নয়। সংবাদটি প্রকাশের পূর্বে সাংবাদিকদের এই বিষয়গুলো বিস্তারিত জানার প্রয়োজন ছিল বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
শিক্ষক সমিতি বলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন পদ্ধতি সম্পর্কে পরিষ্কার জ্ঞান না রেখে ‘অসত্য’ তথ্য পরিবেশন করে একজন শিক্ষকের সম্মানহানি করা হয়েছে।সংবাদগুলোকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে হেয় করা বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের বর্তমান অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার শামিল।’
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার স্নেহভাজন সাংবাদিকরা প্রকৃত অবস্থা না জেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পথ সমূহের বিন্যাস না বুঝে এ রকম একটি সংবাদ পরিবেশন করে আমাকে জনসম্মুখে হেয় করার অপচেষ্টায় আমি খুবই ক্ষুব্ধ এবং বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়েছি। এ ধরনের অসত্য সংবাদ পরিবেশন পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ভাবমূর্তিকে খাটো করা হয়েছে যা এই ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের নিকট থেকে আশা করিনি।‘ভবিষ্যতে এ ধরনের অসত্য তথ্য পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি এবং একই সঙ্গে এ ধরনের অপচেষ্টা বন্ধ না হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইমদাদুল হক বলেন, ‘ডিন পদ আমাদের আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এখানে ভিসির কিছু করার নেই। নিয়ম মোতাবেক যে হওয়ার সেই হবে। ভিসি ইচ্ছা করলে দিতেও পারবে না, ইচ্ছে করলে বাদ ও দিতে পারবে না। আইনগতভাবে যে পাওয়ার সেই পেয়েছে। ডিন-চেয়ারম্যান পদ যে প্রাপ্য সেই পাবে।’
তবে প্রশাসনিক পদকে একাডেমিক পদ উল্লেখ করে বেশ কয়েকটি পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ ও অনলাইন পোর্টালে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা।