ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইলের লোহাগড়ার দিঘলিয়া গ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫ আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
নড়াইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদুল আলম সোমবার বিকেলে আসামিদের রিমান্ডে পাঠান। এর আগে ৭ দিনের রিমান্ডে পেতে আদালতে আবেদন করে পুলিশ।
লোহাগড়া থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এসব নিশ্চিত করেছেন।
আসামিদের রোববার রাতে ও সোমবার সকালে লোহাগাড়া থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলে, সাইদ শেখ, রাসেল মৃধা, কবির গাজী, রেজাউল শেখ ও মাসুম বিল্লাহ।
বাড়িঘর ও দোকান ভাঙচুর এবং দুটি মন্দিরে হামলার ঘটনায় লোহাগড়া থানার এসআই মাকরুফ রহমান রোববার রাতে মামলা করেন। তাতে ২০০ থেকে ২৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর জানান, ঘটনার দিন জনরোষ সৃষ্টি ও হামলার সঙ্গে আসামিরা জড়িত ছিলেন। রিমান্ডে তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। তখন বোঝা যাবে তাদের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল।
এ নিয়ে হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এর আগে ১৬ জুলাই রাতে দিঘলিয়া গ্রামের সালাহ উদ্দীন কচি অভিযুক্ত আকাশ সাহার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এখন তিনি তিন দিনের রিমান্ডে আছেন।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্টে আকাশ সাহা নামের এক কলেজছাত্রের ফেসবুক আইডি থেকে গত ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার বিতর্কিত কমেন্ট করার অভিযোগ ওঠে। এর জেরে শুক্রবার বিকেলে হামলা চালানো হয় দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ায়।
হামলাকারীরা গোবিন্দ সাহা ও দিলীপ সাহার বাড়ি, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাবা অশোক সাহার দোকানসহ ১০টির বেশি বাড়ি-দোকান ভাঙচুর করে। গোবিন্দ সাহার বাড়িতে আগুনও দেয়া হয়।
বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি সাহাপাড়া মন্দিরের প্রতিমা, চেয়ার ও সাউন্ড বক্স ভাঙচুর করে। ফলে ভীতসন্ত্রস্ত হিন্দু পরিবারের অধিকাংশ সদস্য আশপাশের গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেন।
তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে গ্রামের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে।
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আজগর আলী বলেন, ‘গ্রামে এখনও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একাধিক ইউনিটের সদস্য মোতায়েন আছে।’