চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে মধ্যরাতে এক কৃষক পরিবারের ওপর হাতির আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ওই পরিবারের ঘরের দরজা ও দেয়াল ভেঙে ১০ থেকে ১২ বস্তা ধান নিয়ে গেছে হাতি। এ সময় অন্য দরজা দিয়ে শিশুসন্তানসহ পালিয়ে রক্ষা পায় পরিবারটি।
রোববার দিনগত রাতে উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ নাটমুড়ার পূর্ব সেন্টারপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন বিভাগের বাঁশখালীর সাধনপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।
নিউজবাংলাকে রাজ্জাক বলেন, ‘হাতির আক্রমণের বিষয়ে সকালে জানতে পেরে বিট কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমি আগামীকাল ঘটনাস্থলে যাব। নির্ধারিত পদ্ধতিতে বন বিভাগকে ক্ষতিপূরণের পরামর্শ দেব।’
ওই এলাকায় মাঝে মাঝেই হাতির আক্রমণের ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘দেড় দুই মাস আগেও এই এলাকায় হাতির আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। মাঝে মাঝেই এখানে পাহাড়ি হাতি আক্রমণ করে। রোববার রাতের আক্রমণে আব্দুল মালেক নামের ওই কৃষকের বেশ কয়েক বস্তা ধান নষ্ট করেছে হাতি। গাছের কাঁঠাল নষ্ট করা ছাড়াও ঘরের দরজা ও দেয়াল ভেঙে ফেলেছে।’
তিনি জানান, গত কয়েক বছরে হাতির আক্রমণে শুধু পুকুরিয়া ইউনিয়নেই ৪ থেকে ৫ জন নিহত হয়েছেন। সবশেষ এক বছর আগে এক বৃদ্ধ মারা গিয়েছিলেন।
হাতির আক্রমণে ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের কর্তা আব্দুল মালেক বলেন, ‘রাত তিনটার দিকে দেয়াল কেঁপে উঠলে বুঝতে পারি, হাতি আক্রমণ করছে। তখন আমার ৭ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে অন্য দরজা দিয়ে কোনোমতে বের হয়ে প্রাণ রক্ষা করি। এ সময় কৌশলে হাতিটিকে তাড়ানোর চেষ্টা করলে এটি আমার দিকে তেড়ে আসে। আমাদের ইটের দেয়াল ও লোহার দরজা ভেঙে ১০ থেকে ১২ বস্তা ধান নিয়ে গেছে। তা ছাড়া গাছের বেশ কিছু কাঁঠালও নষ্ট করেছে।’
হাতির আক্রমণের জন্য বিপজ্জনক এলাকা হওয়ায় বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নে বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে বলে জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘হাতির আবাসস্থল নষ্ট হওয়ায় তারা জনবসতিতে আক্রমণ করে। তা ছাড়া তাদের যে পানির প্রাকৃতিক উৎস, সেসবও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি যেন জানমালের ক্ষতি কম হয়। আর যদি ক্ষতি হয়েও যায়, তাহলে সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে- এটা বোঝানোর চেষ্টা করছি তাদের।’