নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা ২০ রোহিঙ্গা আটকের পর উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৫ পুরুষ, ৬ নারী ও ৯ শিশু ছিল।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের কিল্লার বাজারসংলগ্ন নামার বাজারের সেলিম মাঝির ঘর থেকে আটক রোহিঙ্গারা পালিয়ে যায়।
এর আগে রাত ৩টার দিকে কিল্লার বাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করেন স্থানীয়রা। পরে ওই রোহিঙ্গা দলটিকে চরএলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাককে জানিয়ে ইউপি সদস্য আব্দুল হক মেম্বারের জিম্মায় রাখা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় অভিযোগ করেন, ভোরে ২০ রোহিঙ্গাকে আটকের সঙ্গে সঙ্গে চরএলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশকে জানানো হয়। কিন্তু আটকের কয়েক ঘণ্টা পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রোহিঙ্গা দলটি পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়।
এ বিষয়ে চরএলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘রাতে রোহিঙ্গাদের খবর পেয়ে আমি ওসি সাহেবকে জানাই। তার পরামর্শে দুজন গ্রাম পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। দুপুরে জানতে পারি স্থানীয় মেম্বার রোহিঙ্গাদের ছেড়ে দিয়েছেন। কী কারণে ছেড়ে দিয়েছেন তা আমি জানি না। রাজনৈতিক বিরোধের কারণে তাকে এ বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করিনি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হক বলেন, ‘ভোরের দিকে জানতে পারি, স্থানীয় সাত্তার মাঝির বাড়িতে রোহিঙ্গারা আছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবরটি পেয়েই ওসি সাহেবকে ফোনে জানাই। ওসির নির্দেশমতো আমি তাদের চৌকিদার ও লোকজন দিয়ে সেলিম মাঝির বাড়িতে পাহারায় রাখি।
‘সকালে ওসি সাহেব তাদের ভাসানচর ফেরত পাঠানোর জন্য ট্রলার ঠিক করতে বলেন। আমি ট্রলারের জন্য ঘাটে ব্যস্ত ছিলাম। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশসহ আমরা এসে দেখতে পাই ওই বাড়িতে রোহিঙ্গারা নেই!’
আব্দুল হক জানান, সকাল থেকেই দুই চৌকিদার রোহিঙ্গা দলটির পাহারায় ছিল। এ ছাড়া শত শত উৎসুক মানুষও ছিল। তাই এত মানুষের চোখ ফাঁকি রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি তার কাছে বেশ গোলমেলে লাগছে।
এ ছাড়া চেয়ারম্যান ফাঁসানোর জন্য দোষ চাপাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন ইউপি সদস্য আব্দুল হক।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সাদেকুর রহমান বলেন, ‘এলাকার লোকজন রোহিঙ্গাদের আটক করেছিল। কিন্তু ঘটনাস্থল থানা থেকে অনেক দূরে হওয়ায় পুলিশ পৌঁছার আগে তারা পালিয়ে যায়। আমরা তাদের খোঁজ করছি। স্থানীয় কেউ জড়িত আছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে।’