কিশোরগঞ্জে সাড়ে চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় মাতব্বরদের ভয়ে থানায় অভিযোগ দেয়ার সাহস পাচ্ছে না ভুক্তভোগীর পরিবার।
শনিবার সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ডাউকিয়া গ্রামে শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত ৫০ বছর বয়সী শরীফ মিয়া একই এলাকার বাসিন্দা মঞ্জিল মিয়ার ছেলে।
শিশুটির বাবা নিউজবাংলাকে বলেন, সেদিন সকালের দিকে মেয়েটি মায়ের পাশে খেলা করছিল৷ এ সময় প্রতিবেশী শরীফ তাকে কোলে নিয়ে আদর করতে থাকেন। একপর্যায়ে বাড়ির পাশে কলাগাছের নিচে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
শিশুটির মা দেখে ফেললে শরীফ পালিয়ে যান।
মেয়েটির বাবা জানান, এ ঘটনার পর স্থানীয় মাতব্বর আজিজুর রহমান খান সংগ্রাম ও ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেনকে জানালে তারা থানায় যেতে নিষেধ করেন। পরে রোববার সকালে মেম্বারের বাড়ির সামনে সালিশ ডাকেন।
সালিশে অভিযুক্ত শরীফকে জুতাপেটা করে ছেড়ে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মাতব্বররা অভিযুক্ত শরীফের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে এই সালিশের আয়োজন করেন।
তবে আজিজুর রহমান খান সংগ্রাম টাকার বিনিময়ে সালিশের আয়োজন করার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘দুই পক্ষই গরিব মানুষ। মামলা মোকদ্দমা করলে উভয় পক্ষেরই টাকা-পয়সা নষ্ট হবে। তাছাড়া মেয়েটার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সালিশের মাধ্যমে অভিযুক্তকে জুতাপেটা করে ঘটনা শেষ করা হয়েছে।’
৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন সালিশে অভিযুক্তকে জুতাপেটা করে সমাধানের কথা স্বীকার করলেও টাকার বিনিময়ে সালিশের আয়োজন অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে বিষয়টি শেষ করেছি, ভুক্তভোগীর পরিবার এতে সন্তুষ্ট হয়েছে।’
ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা সালিশে সমাধানযোগ্য কি না, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. জুয়েল মিয়া বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। বর্তমান মেম্বার সালিশেও আমাকে ডেকেছিল। কিন্তু বিষয়টি সালিশে সমাধানযোগ্য নয় তাই সেখানে যাইনি।’
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’