বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ধর্ষণের’ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় আ.লীগ-যুবলীগ নেতা

  •    
  • ১৮ জুলাই, ২০২২ ১৭:১৩

ওই কিশোরী জানায়, গত ২৮ জুন রাতে সে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হয়। এ সময় চানন্দী বাজারের পল্লি চিকিৎসক জহির উদ্দিন তাকে বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ভুক্তভোগীর পরিবার ও জহির উদ্দিনকে ডেকে নিয়ে গভীর রাতে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায় করেন ওই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মালেক ফরাজী, যুবলীগ নেতা তাজুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। পরে সালিশে জহির উদ্দিনকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করে বিষয়টি মীমাংসা করে ফেলেন তারা।

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ইউপি সদস্য, সংরক্ষিত নারী সদস্যের স্বামী যুবলীগ নেতা ও আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে সালিশের নামে এক কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

যে তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক, একজন যুবলীগের নেতা।

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাদী এই ঘটনায় যে মামলা করেছেন, তাতে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতার নাম ছিল। কিন্তু এই দুই নাম বাদ দিয়ে যার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, কেবল তার নাম রেখেছে।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ করে ৭০ হাজার টাকায় মীমাংসার কথা বলে সিদ্ধান্ত জানান আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতা। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য।

বাদী যে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তিনি এই ঘটনাটিকে সত্য উল্লেখ করে দায় দিয়েছেন ইউপি সদস্যের ওপর। দাবি করেছেন, তিনিই মামলা করতে বলেছেন। তবে ইউপি সদস্য বলেছেন, তিনি মনেই করতে পারছেন না কোনো সালিশ হয়েছে কি না।

রোববার বিকেলে জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নবনিতা গুহ ১৬ বছরের ওই কিশোরীর জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। এর আগে দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়।

অভিযোগ অনুযায়ী গত ২৮ জুন রাতে হাতিয়া উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের আদর্শ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ১৩ জুলাই ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর মা হাতিয়া থানায় মামলা করেন।

ওই কিশোরী জানায়, গত ২৮ জুন রাতে সে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হয়। এ সময় চানন্দী বাজারের পল্লি চিকিৎসক জহির উদ্দিন তাকে বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন।

বিষয়টি জানজানি হলে ভুক্তভোগীর পরিবার ও জহির উদ্দিনকে ডেকে নিয়ে গভীর রাতে সাদা স্ট্যাম্পে সই আদায় করেন ওই ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মালেক ফরাজী, যুবলীগ নেতা তাজুল ইসলাম ও চানন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন।

পরে সালিশে জহির উদ্দিনকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করে বিষয়টি মীমাংসা করে ফেলেন তারা।

ভুক্তভোগীর পরিবার এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজি হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সাফ জানিয়ে দেন, এ বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই।

পরে চিকিৎসক জহির উদ্দিন এবং সালিশের নামে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার ঘটনায় মালেক ফরাজী, তাজুল ইসলাম ও ইসমাইল হোসেনকে আসামি করে থানায় মামলা দেন ওই কিশোরীর মা।

কিন্তু পুলিশ মামলার এজাহার থেকে সালিশকারীদের নাম বাদ দিয়ে কেবল জহির উদ্দিনের নাম রাখে বলে অভিযোগ করেন বাদী।

কিশোরীর মা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তারা আমাকে বলে আসামি ধরিয়ে দিলে মামলা নেয়া হবে।’

দুই শালিসকারীর নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আমার মেয়ের নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার চাই।’

এ ব্যপারে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমীর হোসেন বলেন, ‘মামলা করারর পর রোববার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভুক্তভোগী কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। একই দিন বিচারক নবনীতা গুহ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।’

আসামিদের নাম বাদ দেয়া প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ‘তারা যেভাবে বলছে সেভাবে আমরা অভিযোগ লিখছি। আমাদেরকে তিনজনের কথা বলে নাই। আমরা তদন্ত করছি।’

কিশোরীর মায়ের অভিযোগের বিষয়ে চানন্দী ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ওই কিশোরী আমার আত্মীয় হয়। ঘটনাটি আমাকে জানানোর পর আমি ইউপি মেম্বার তাজুলকে জানাই। তিনি সালিশ করে জহিরের ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করে স্ট্যাম্পে সই নিয়েছেন। আমি এ বিষয়ে একমত ছিলাম না। আমিই মামলা করতে বলছি।’

ইউপি সদস্য আবদুল মালেক ফরাজী বলেন, ‘এ বিষয়ে খেয়াল নাই তো। কোন বিষয়ে কোন মামলা হইছে। এলাকায় তো অনেক ভেজাল। ওইদিকে কিছু ভেজাল আছে। তবে এখনও কোনো শালিস হয় নাই। আমি খোঁজ খবর নিয়ে জানাইতেছি।’

এ বিভাগের আরো খবর