বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অফিসের সময় কমানো হবে নাকি বাসা থেকে অফিসের কার্যক্রম (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) চলবে তা শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অফিস সময় কমিয়ে আনা হতে পারে অথবা ওয়ার্ক ফ্রম হোম করা হতে পারে। অফিসে যতটুকু না করলেই না এমনভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করার বিষয়টি চিন্তা করছি।
‘সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এ বিষয়ে জানাব। মানুষের কষ্ট যাতে না হয় সেটা বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নেব। আলোচনার পর্যায়ে আছে। কেউ বলছে ৯টা-৩টা বা ৪টা, তবে এটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চলছে। যেটা করলে ভালো হয় সেটাই করব। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সিদ্ধান্তটা আমরা নেব। আমরা সব বিষয় বিশ্লেষণ করে সঠিক কাজটি করার চেষ্টা করব।’
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অফিসের সময় কমানো হবে নাকি বাসা থেকে অফিসের কার্যক্রম (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) চলবে তা শিগগির চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এ কথা জানান।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অফিস টাইমটা একটু কমিয়ে দেয়া যেতে পারে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, করোনার মধ্যে ওয়ার্ক ফ্রম হোম বিষয়টিতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। আমরা বাসা থেকে কাজ করেও হয়তো কিছুটা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারি।
‘একইসঙ্গে আমাদের অফিস ভবনগুলোতে যেটুকু না করলেই নয় সেভাবে যেন বিদ্যুৎ ব্যবহার করি। এটিও কিন্তু আমাদের চিন্তা-ভাবনার মধ্যে আছে। সবই পর্যালোচনা পর্যায়ে আছে। কোনটা করলে আমরা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে চালিয়ে নিতে পারব। অবস্থা বুঝেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই এটি করতে চাই। হয়তো সপ্তাহখানেকের মধ্যে আমরা বিষয়টি জানাব। মানুষের কষ্ট যেন না হয় এ বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা অফিস সময় কয়টা থেকে কয়টা করব তা আলোচনা পর্যায়ে আছে। বিভিন্ন প্রস্তাবও আছে। কেউ কেউ বলছে ৯টা থেকে ৩টা বা ৪টা পর্যন্ত হতে পারে। কোনটা করলে ভালো হবে এটা এখনও আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে।
‘আজও আমরা আলোচনা করেছি। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও এ নিয়ে আলোচনা চলছে। সেক্ষেত্রে যেটা করলে ভালো হবে সেটাই আমরা করবো। অফিস টাইম কমিয়ে বা ভার্চুয়ালি অথবা দু্টোই হতে পারে। এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’
সরকারি কর্মকর্তারা গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেন জ্বালানির অপব্যবহার করতে না পারেন সে পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। কারা এটা ব্যবহার করছে সে রিপোর্ট আমরা জমা নিচ্ছি। এটি এখন আমরা আরও গুরুত্ব সহকারে দেখব।
‘একইসঙ্গে অফিস-আদালতে এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সব মন্ত্রণালয়ে বার্তা দিচ্ছি যাতে করে সবাই কৃচ্ছ্রতা সাধন করেন। যেটুকু প্রয়োজন সেটিই যেন ব্যবহার করেন।’
এর আগে এদিনই বিদ্যুৎ সংকটে মঙ্গলবার থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। লোডশেডিং হতে পারে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত। একই সঙ্গে সপ্তাহে এক দিন বন্ধ থাকবে পেট্রল পাম্প।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সমন্বয় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত সাময়িক। বিশ্ব পরিস্থিতির উত্তরণ হলে আগের অবস্থানে ফিরে আসা হবে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সারা দেশে এক দিন পেট্রল পাম্প বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে বন্ধ রাখা হবে, সেটা পরে জানানো হবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস এ সময় জানান, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারি-বেসরকারি অফিস ভার্চুয়ালি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। সরকারি অফিসগুলোতে কীভাবে সময় কমিয়ে আনা যায়, সেটাও ভাবা হচ্ছে।
জ্বালানি তেল ও গ্যাসের আমদানি মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণে সরকার রয়েসয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বিদ্যুতের যাওয়া-আসার স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে।
কয়েক বছর ধরে সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের অভ্যাসের কারণে বিদ্যুতের যাওয়া-আসা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, সামাজিক মাধ্যমে অসন্তোষের কথা তুলেও ধরছেন হাজারো মানুষ।
সরকার বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য, বিশেষ করে এলএনজির দামে লাফ, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কয়লা সরবরাহে বিঘ্নের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমাতে হয়েছে।
পাওয়ার সেলের তথ্যানুযায়ী, দেশে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। সেই জায়গায় উৎপাদন হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত।
জ্বালানি তেলের দাম বেশি বলে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো যাচ্ছে না। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং কোভিড-পরবর্তী চাহিদা বাড়ায় আগামী কয়েক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম বাড়তির দিকে থাকবে বলেই পূর্বাভাস আছে।