বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নড়াইলে লাঞ্ছিত অধ্যক্ষ স্বপন এখনও আত্মগোপনে

  •    
  • ১৮ জুলাই, ২০২২ ১২:১০

অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাড়িতে ফিরলে আবারও অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এলাকার পরিবেশ এখনও ঠিক হয়নি। তাই আত্মগোপনে রয়েছি।’

এক মাস আগে এই দিনে (সোমবার) হঠাৎ করেই বদলে যায় নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের পরিবেশ। এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্টের জেরে দিনভর চলে ব্যাপক সহিংসতা। জুতার মালা পরিয়ে অপদস্থ করা হয় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে।

সেই ঘটনার পর থেকেই বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। কয়েকবার প্রস্তুতি নিয়েও পিছিয়ে গেছে খোলার তারিখ। কবে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি।

কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আগে কয়েকবার কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে সবশেষ ২০ জুলাই কলেজ আংশিকভাবে খোলার জন্য প্রশাসনের সম্মতি পেয়েছি। সেইভাবে প্রস্তুতি চলছে।’

অন্যদিকে আতঙ্কে এখনও আত্মগোপনে আছেন সেই অধ্যক্ষ। বাড়িতে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন তিনি। নিরাপদ মনে করছেন না কর্মক্ষেত্রকেও।

অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাড়িতে ফিরলে আবারও অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এলাকার পরিবেশ এখনও ঠিক হয়নি। তাই আত্মগোপনে রয়েছি।’

ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে এক হিন্দু শিক্ষার্থী ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন- এমন অভিযোগ তুলে কলেজে গত ১৮ জুন পুলিশের সামনেই শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে অপদস্থ করা হয়।

গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন স্বপন কুমার। মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে এ নিয়ে দিনভর চলে উত্তেজনা।

এরপর পুলিশ পাহারায় স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি।

নড়াইলের এই মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজে গেল ১৮ জুন দিনভর চলে সহিংসতা। ছবি:নিউজবাংলা

শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।

মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। দেশজুড়ে তৈরি হয় তীব্র ক্ষোভ।

সেদিনের দুর্বিষহ স্মৃতি এখনও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে অধ্যক্ষ স্বপনকে। এই মুহূর্তে কলেজে ফিরতে চান না তিনি। বলেন, ‘এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে প্রশাসনের আগে পরিবেশ ঠিক করা উচিত। তারপর কলেজ খুলুক। পরিস্থিতি স্বভাবিক হলে আমি কলেজে ফিরব।’

তবে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পরিচালনা পর্ষদের সবাই মিলে স্বপন কুমার বিশ্বাসের কাছে যাব। তাকে ফের কলেজে আসার অনুরোধ করব। আমরা সেই চেষ্টা করছি।

‘আমাদের ইচ্ছা আছে গ্রামের সব মানুষকে ডেকে নিয়ে ফুলের মালা গলায় দিয়ে তাকে আবারও কলেজে ফিরিয়ে আনব।’

কলেজে হামলা ও শিক্ষক হেনস্তার ঘটনায় ২৭ জুন নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন পুলিশের উপপরিদর্শক ও মির্জাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ শেখ মোরছালিন।

দণ্ডবিধির ৩৪, ১৪৩, ৪৪৭, ৪৪৮, ৩২৩, ৩৪১, ৩৩২, ৩৫৩, ৩৫৫, ৪৩৬, ৪২৭, ৫০০ ধারায় করা এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১৭০ থেকে ১৮০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নড়াইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহামুদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অধ্যক্ষের বাড়িতে এখনো পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ওই কলেজে ও এলাকায় পুলিশ দিনরাত টহল দিচ্ছে। কারও আতঙ্কের কারণ নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর