বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লড়াই আমার সঙ্গে করুন: মাশরাফি

  •    
  • ১৭ জুলাই, ২০২২ ২৩:৫৭

মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা এমপি লিখেছেন, ‘আমাকে ভোগানোর জন্য দয়া করে সাধারণ অসহায় মানুষের আর ক্ষতি করবেন না। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, লড়াই আমার সঙ্গে করুন। আমি জানি, নড়াইলে রাজনীতি যাদের কাছে পেশা, তাদের কাছে আমি এখন নেশা।’

ধর্মীয় অবমাননামূলক মন্তব্যের অভিযোগে নড়াইলের লোহাগড়া থানার দিঘলিয়া গ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলার নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট লিখেছেন ক্রিকেটার ও সংসদ সদস্য (এমপি) মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা।

নিজ ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে রোববার দেয়া পোস্টে তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের চ্যালঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, ‘পেছন থেকে ষড়যন্ত্র না করে সামনে থেকে আঘাত করুন। আমার সঙ্গে সরাসরি লড়াই করুন।’

নড়াইলের স্থানীয় রাজনীতির কিছু উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘আমাকে ভোগানোর জন্য দয়া করে সাধারণ অসহায় মানুষের আর ক্ষতি করবেন না। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, লড়াই আমার সঙ্গে করুন।’

নিজ নির্বাচনী এলাকায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মাশরাফি। ছবি: সংগৃহীত

সাহাপাড়ায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখছেন নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘একটু বোঝার চেষ্টা করছি, আর কত দিক থেকে আক্রমণ হতে পারে। প্রথম আক্রমণের কথা হয়তো সবাই ভুলে গেছে, তাই মনে করিয়ে দিচ্ছি। প্রথম ঝামেলা করল তারা মাওলানা মামুনুলকে নিয়ে। তাকে যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা দিল, তখন ওয়াজ করার জন্য তাকে নড়াইলে আনা হলো।

‘কথা হলো, যখন ওয়াজ মাহফিল হয়, সেটার পারমিশন দিয়ে থাকেন ডিসি। নিরাপত্তার ব্যাপার দেখেন এসপি। এখানে এমপিদের কোনো কাজই নাই। কিন্তু ডিসি বা এসপি থেকে আমাকে বিন্দুমাত্র না জানিয়ে ওয়াজ মাহফিল দেওয়া হলো নোয়াগ্রামে, যেখানে আমার শ্বশুরবাড়ি। তাকে আগেই বলা হলো যে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি নেওয়া আছে, আপনি চলে আসেন। অথচ কালনা ঘাট পর্যন্ত আনার পর তবেই কেবল ডিসিকে জানাল, এসপিকে জানাল। ঘাট থেকে যখন তাকে বলা হলো যে, আপনার চিঠি কোথায়? সে দিতে পারল না।

‘মাহফিল কর্তৃপক্ষ তখন আমাকে ফোন করে বলল, আপনি সমস্যা ঠিক করেন। কথা হলো- তখন এই সমস্যার সমাধান করা কিভাবে সম্ভব? এটা তো পুরোটাই একটা প্রক্রিয়া, যা আরও সাত দিন আগে থেকে করতে হয়! তখন ওই লোকগুলো বলা শুরু করে দিল, আমি নাকি ওয়াজ মাহফিল হতে দিচ্ছি না।’

স্থানীয় নেতিবাচক রাজনীতির প্রতি ইঙ্গিত করে মাশরাফি বলেন, ‘পুরো খেলাটা খেলেছে এমনভাবে, আমার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় তাকে এনে সরকারের কাছে প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, আমি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মানছি না। আর যদি না আসতে পারে, তাহলে প্রচার করা হবে যে, মাশরাফি ওয়াজ করতে দেয় না। দুই দিক থেকেই তাদের জয়। আর দুই পক্ষের কাছেই আমাকে খারাপ বানাবে।’

মাশারাফি লিখেছেন, ‘তবে যাই হোক, আল্লাহ মালিক, সত্য আর চাপা থাকেনি। সবাই কমবেশি জেনেছে সত্যিটা, আর যারা জানে না, তারা ভুল বুঝেই আছে। এবার উল্টো খেলা খেলল তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের ওপর আক্রমণ করে তাদের বিপদে ফেলা, পাশাপাশি আমাকেও বিপদে ঠেলে দেওয়া।

‘এমনকি কিছুদিন আগে কালিয়ার মির্জাপুরে সম্মানীত একজন শিক্ষককে অপমানের ঘটনায়ও আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে, অথচ ওটা আমার আসনের ভেতর নয়।’

ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশে মাশরাফি বলেন, ‘আপনারা সব তো করলেন। এবার আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ, পেছন থেকে আঘাত করতে করতে আপনারা ক্লান্ত হয়ে যাবেন। তো আসুন, সামনে থেকে আঘাত করুন। আমার সঙ্গে সরাসরি লড়াই করুন। আমি সাধুবাদ জানাব।

‘কিন্তু আমাকে ভোগানোর জন্য দয়া করে সাধারণ অসহায় মানুষের আর ক্ষতি করবেন না। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, লড়াই আমার সঙ্গে করুন। আমি জানি, নড়াইলে রাজনীতি যাদের কাছে পেশা, তাদের কাছে আমি এখন নেশা।’

শুক্রবার বিকেলে নড়াইলের লোহাগড়া থানার দিঘলিয়া গ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও তার বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। তার আগেই এলাকার কিছু মানুষ তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আক্রান্ত হয় সনাতন ধর্মের অনুসারী একাধিক পরিবার।

এর আগে গত ১৮ জুন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে এক হিন্দু শিক্ষার্থী ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন- এমন অভিযোগ তুলে কলেজে পুলিশের সামনেই শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে অপদস্ত করা হয়। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় যে ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন স্বপন কুমার। পুলিশ পাহারায় স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল মানুষ। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এ ঘটনায় সারা দেশে প্রতিক্রিয়া হয়।

সাম্প্রদায়িক এসব ঘটনায় নড়াইলের সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিব্রতকর অবস্থায়। ঘটনার আগে ও পরে প্রশাসনিক পদক্ষেপে শিথিলতার বিষয়ও আসছে আলোচনায়।

এ বিভাগের আরো খবর