কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে খুলনার কয়রায় তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। রাতের জোয়ারে পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কায় আছেন হাজারও মানুষ।
উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের চরামুখা খালের গোড়ার উত্তর দিকে রোববার ভোর রাতে বাঁধে ভাঙন শুরু হয়। সকাল ৮টা পর্যন্ত দেড় শ মিটার বিলীন হয়ে যায়। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক বাঁধ মেরামতে নামেন।
ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওসমান গনি বলেন, ‘সকালে আমারা বাঁধ মেরামত শুরু করি। বেলা ১১টার দিকে জোয়ার এলে কাজ বন্ধ করা হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে পানি নেমে গেলে আবারও আমরা জেনারেটরে বাতি জ্বালিয়ে কাজ শুরু করেছি।
‘রাতে আমরা রিং বাঁধ করার জন্য বল্লি (বাঁশ বা কাট) পুতে রাখবো। সোমবার সকালে সেখানে মাটি ফেলা হবে। বাঁধ মেরামত করতে না পারায় দুপুরের মধ্যে জোয়ারের পানিতে চরমুখা, দক্ষিণ বেদকাশি, মধ্যপাড়া, ঘড়িলালা ও রাতাখালি গ্রামের অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাতের জোয়ারে পুরো দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ১৪টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এই ইউনিয়নে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।’
বাঁধটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ কার্যালয়।
কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (পুর) মশিউল আবেদীন বলেন, ‘জাইকার অর্থায়নে বাঁধটির নির্মাণ কাজ চলছিল। সেখানে ভাঙনের কোনো আশঙ্কা ছিল না। বাঁধের সামনে বেশ বড় সমতল চর ছিল।
‘ভোর রাতে হঠাৎ নদীভাঙন শুরু হয়। এক পর্যায়ে ওই ভাঙন বাঁধের দিকে এগিয়ে আসে। সকাল ৮টা পর্যন্ত বাঁধের ১৫০ মিটারের বেশি বিলীন হয়ে যায়। যা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করেছিল। বেলা ১১টার দিকে জোয়ার শুরু হলে আর কাজ করা সম্ভব হয়নি। সন্ধ্যায় ভাটা হলে আবারও তারা সংস্কার শুরু করে। আমরা তাদের অর্থ ও সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করছি।’
পানি প্রবেশ ঠেকাতে সেখানে রিং বাঁধ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘প্লাবিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সার্বিক সহযোগিতা করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দ্রুত বাঁধ মেরামতের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’