এক/এগারোর সময় কারাবন্দি অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা এঁটেছিলেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, সে সময় আইনজীবী হিসেবে কারাগারে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন। তখন শেখ হাসিনা তাকে একটি খাতা দেখিয়েছিলেন যেখানে কোন সালে কী উন্নয়ন করবেন, দেশকে কী অবস্থায় নিয়ে যাবেন সেই পরিকল্পনা তিনি লিখে রেখেছিলেন। আর তার ওপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছিল দিন বদলের সনদ তথা ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে যুব মহিলা লীগ আয়োজিত এক সভায় শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রোববার এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী অনুষ্ঠানে আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা আগে থেকেই জানতেন তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি বলতেন, তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাংলার জনগণ তা মেনে নেবে না। দলের সবাইকে তিনি অভয় দিতেন। আর পরবর্তী সময়ে হয়েছেও তাই। তার গ্রেপ্তার এ দেশের মানুষ মেনে নেয়নি। তাকে ছাড়া এ দেশে নির্বাচন হতে পারেনি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং এ দেশের মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ দেয় তৎকালীন সরকার।’
আওয়ামী লীগের অন্যতম এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, প্রজ্ঞা, দূরদৃষ্টি, সাহস, সততার জন্যই তিনি আজ বিশ্বনেতা। এ গুণাবলির কারণেই তিনি বিশ্বব্যাপী এই খারাপ সময়েও দেশকে স্বাভাবিক গতিতে রাখতে পেরেছেন। তার নেতৃত্বেই আমাদের অর্থনীতিতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। যেখানে করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দা বিরাজ করছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আপসহীন নেতা উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা শুধু প্রধানমন্ত্রী বা আওয়ামী লীগ সভাপতি নন, তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা। অন্যায়ের কাছে কখনও আপস করেননি। এক/এগারোর সরকার তার দেশে ফেরার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তাকে ভয় দেখানো হয়েছিল, হুমকি দেয়া হয়েছিল যে দেশে ফিরলে তাকে বিমানবন্দরেই হত্যা করা হবে বা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে।
‘দেশে তিনি যাতে আসতে না পারেন সে জন্য সব প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা সেসব হুমকি উপেক্ষা করে সব বাধাকে জয় করে দেশে ফিরেছিলেন।
‘তিনি দেশে ফেরার পর প্রতিদিনই তাকে মৃত্যু তাড়া করেছে। এর আগেও তাকে ২১ বার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা দমে যাননি, ভয় পাননি। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে দেশে ফিরেছিলেন। আর তিনি ফিরেছিলেন বলেই দেশে গণতন্ত্র ফিরেছিল। দেশ উন্নত হয়েছে এবং সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আর তাকে যারা কারারুদ্ধ করেছিল, তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
‘আর যারা ২০০১-পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন করেছে, নারী নির্যাতন করেছে, সন্ত্রাস করেছে, আওয়ামী লীগের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, পরবর্তী সময়ে আগুন সন্ত্রাস করেছে, আজ তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।’