নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে একই দিনে দুই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।রোববার সংলাপ শুরুর প্রথম দিনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল এনডিএমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি নির্বাচনে কোনো দলের কর্মীরা তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে প্রতিদ্বন্দ্বীদেরকে রাইফেল নিয়ে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিলেও বাংলাদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে সংলাপে তলোয়ার ও রাইফেল নিয়ে ‘যুদ্ধ’ না করার পরামর্শ দেন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এই সংলাপ শুরু হয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়া কমিশন এর আগেও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নিয়ে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা হবে কি না, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দলগুলোর মতামত শুনে এখনও অবশ্য কমিশন তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি।
দ্বিতীয় ধাপের এই সংলাপ করা হচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি নিয়ে।
প্রথম দিনের সংলাপে সিইসি প্রথমে কথা বলেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে আলোচনার সময় দলগুলোকে যেকোনো উপায়ে ভোটের মাঠে থাকার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ খেলোয়াড় হচ্ছে রাজনৈতিক দল।…আপনারা মাঠে যাবেন; মাঠে খেলবেন। আমরা রেফারি। আমাদের অনেক ক্ষমতা আছে। ক্ষমতা কিন্তু কম না।…মাঠে কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়, আপনাকে একটা রাইফেল ও তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে।’
সিইসি যখন এ কথা বলেন, তখন এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ তার প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আইনে আমাদের শটগান নিয়ে দাঁড়ানো পারমিট করে না।’
তবে দ্বিতীয় দল বাংলাদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে সংলাপে সিইসির বক্তব্য পুরো পাল্টে যায়। এবার তিনি গুরুত্ব দেন সম্প্রীতি ও শান্তি নিশ্চিত করার ওপর।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এক ধরনের যুদ্ধ। অনেকেই বলছেন আসেন যুদ্ধের মাঠে আসেন। সেখানে আসলে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করলে হবে না। আপনাদের আসলে জনসমর্থম নিয়ে যুদ্ধ করতে হবে।
‘আপনারা তলোয়ার, রাইফেল নিয়ে যুদ্ধ করবেন না। আপনাদের জনসমর্থন যেগুলো আছে তারা আসবে। আপনারা ব্যালট নিয়ে যুদ্ধ করবেন। সেই যুদ্ধটা আপনাদের করতে হবে।‘শক্তির ভাষায় কথা না বলে টেবিলে বসে যুক্তির ভাষায় কথা বলুন। গঠনমূলক আলোচনা করুন। সংকট থেকে যেতে পারে। অনাস্থা দূর হতে পারে; বা কমে আসতে পারে।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব কমানোর তাগিদ দেন সিইসি। বলেন, ‘আপনার ভোট আপনি আমার ভোট আমি দেব। আমার লোককে আপনি ভোট দিতে দেন। আপনার লোককেও আমি সমভাবে ভোট দিতে দেব।’
সুষ্ঠু ভোটের অনুকূল পরিবেশ এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলে সিইসি বলেন, ‘সকলের দায়িত্বশীল আচরণ এবং একান্ত সহযোগিতা প্রয়োজন।’