ধর্মীয় অবমাননামূলক মন্তব্যের অভিযোগে নড়াইলের লোহাগড়া থানার দিঘলিয়া গ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় এলাকা পরিদর্শন করেছেন ক্রিকেটার ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা।
শনিবার বিকেল ৫টায় তিনি ওই গ্রামে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িতে গিয়ে তাদের সহায়তা ও নিরাপত্তার আশ্বাস দেন।
এ সময় স্থানীয়দের উদ্দেশে মাশরাফি বলেন, ‘এখানে পুলিশ সব সময় থাকবে। আপনারা সবাই সহযোগিতা করবেন। নড়াইলে আগে কখনও এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আপনাদের লজ্জা থাকা উচিত। নড়াইলে এই ধরনের ঘটনা শুরু হয়েছে, আপনাদের মাধ্যমে। এটা কেউ চায় না।’
তিনি বলেন, ‘একবার ভেবে দেখেন, আপনার পরিবারের কাউকে যদি এভাবে আঘাত করা হয়, আপনার কেমন লাগবে!
‘আজকে আমি এসেছি, সবাই মোবাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে গেছেন। আপনাদের মোবাইল নামান। কালকে আপনারা কোথায় ছিলেন।
‘যদি কেউ ভুল করে, তবে আইন আছে। থানায় জানালে প্রশাসন তার পদক্ষেপ নেবে। আমি বা আপনি কে?
এ সময় এ ধরনের ঘটনা না ঘটানোর অনুরোধ জানিয়ে সবাইকে পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি সামাজিকভাবে পাশে এসে না দাঁড়ান, তাহলে কিন্তু আমরা সমাধান করতে পারব না।’
ভুক্তভোগীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখানে যারা আছেন, তারা এতটুকু শিওর থাকেন, আপনারা স্বাভাবিকভাবে বসবাস করছিলেন। সামনেও স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে পারবেন। কোনো সমস্যা হবে না। ’
এ সময় মাশরাফির সঙ্গে ছিলেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্টে আকাশ সাহা নামের এক কলেজছাত্রের ফেসবুক আইডি থেকে গত বৃহস্পতিবার বিতর্কিত কমেন্ট করার অভিযোগ ওঠে। এর জেরে শুক্রবার বিকেলে হামলা হয় দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ায়।
হামলাকারীরা গোবিন্দ সাহা ও দিলীপ সাহার বাড়ি, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাবা অশোক সাহার দোকানসহ ১০টির বেশি বাড়ি-দোকান ভাঙচুর করে। গোবিন্দ সাহার বাড়িতে আগুনও দেয়া হয়।
বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি সাহাপাড়া মন্দিরের প্রতিমা, চেয়ার ও সাউন্ড বক্স ভাঙচুর করে। ফলে ভীতসন্ত্রস্ত হিন্দু পরিবারের অধিকাংশ সদস্য আশপাশের গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেন।
এ ছাড়া রাতেই আকাশ সাহা ও তার বাবা অশোক সাহাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। বর্তমানে তারা পুলিশ হেফাজতে আছেন।