ভোলার চরফ্যাশনের চরনিজাম এলাকায় বঙ্গোপসাগরের মোহনায় বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ভাসছে ‘আলকুবতান’ নামে একটি নাবিকবিহীন জলযান। সেটি শুক্রবার সকালে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে কোস্টগার্ড।
ভোলা কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা কে এম শাফিউল কিঞ্জল জানিয়েছেন, এটি বার্জ। মহেশখালীর মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য পাথর নিয়ে যাচ্ছিল এটি। টাগবোট থেকে এটি কোনোভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। টাগবোট ও এর নাবিকদের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমরা খবর পেয়েছি। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় সেখানে কোস্টগার্ড রাতে যেতে পারেনি। সকালে ৯ সদস্যর একটি টিম পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে কোস্টগার্ডের সদস্যরা বার্জটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।’
চরফ্যাশনের ঢালচর ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরনিজামের পূর্ব পাশে বৃহস্পতিবার দুপুরে নাবিকবিহীন পাথরবোঝাই বার্জটি ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। তারা এটিকে প্রাথমিকভাবে জাহাজ বলেই মনে করেন।
বার্জটিতে পাথর ছাড়াও একটি ভেকু, একটি পাথর ভাঙার মেশিন ও আরও কিছু সরঞ্জাম আছে।
ঢালচর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, ‘জাহাজটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা আমাকে জানায়। বৈরী আবহাওয়ার কারণে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের একটি টিম সেখানে আছে।’
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান বলেন, ‘আলকুবতান লেখা জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সারজার একটি কোম্পানির। বৃহস্পতিবার বিকেলে সাগর থেকে ভাসতে ভাসতে চরনিজামের দিকে চলে আসে এটি।’
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জাহাজটিতে বিপুল পাথর, ভেকু মেশিন আছে। আমাদের পুলিশ ও কোস্টগার্ডের একটি টিম সেখানে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলেছি, যাতে জাহাজের কোনো মালামাল লুট না হয়।’
কোস্টগার্ড কর্মকর্তা শাফিউল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বার্জটির ভেতরে একটি এক্সকেভেটর (ভেকু), একটি পাথর ভাঙার মেশিন, আনুমানিক ১৩ হাজার টন পাথরসহ বেশ কিছু সরঞ্জাম আছে। ভারতের কাকিনাদা পোর্ট থেকে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চলমান কাজের জন্য রওনা দেয় এটি।
‘পথে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় টো করা টাগবোট এ এম অ্যাকুয়ার্ড থেকে বার্জটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এখন এটি কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় আছে। এর ভেতরে কোনো লোকজন ছিল কি না তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
মহেশখালীর মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আতাউল হাকিম সিদ্দীকি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার এক এজেন্সির লোকজন বিষয়টি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানায়। টাগবোট থেকে বেল্ট ছিড়ে বার্জটি ছিটকে যায়। তখন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি ক্রুরা।’
তবে বার্জটি কোথা থেকে আসছিল বা কোন বন্দরে যাচ্ছিল তা জানা নেই বলে জানান আতাউল। জাহাজের পক্ষ থেকে জানানো হলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।