বৃষ্টি ও পূর্ণিমার জোয়ারে সুগন্ধা, হলতা ও বিষখালীর পানি অস্বাভাবিক বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। নদীর পাড় উপচে ঝালকাঠির বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলার প্রধান তিন নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
এরই মধ্যে ঝালকাঠির চার উপজেলার ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় কাঁঠালিয়া উপজেলায় ডুবেছে ১৪টি গ্রাম। নলছিটি, রাজাপুর ও সদর উপজেলায় ডুবেছে ১১টি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষখালীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন চত্বরসহ বিভিন্ন সড়ক।
এই সময়ে আউরা ও শৌলজালিয়া আশ্রয়ণ এলাকা, কাঁঠালিয়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বর, কাঁঠালিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর এবং চিংড়াখালী, জয়খালী, মশাবুনিয়া, ছৈলারচর, কচুয়া, রঘুয়ারদরি চর, জাঙ্গালিয়াসহ তলিয়ে গেছে অনেক গ্রাম। এসব এলাকার কৃষি, মৎস্য ও কাঁচা-পাকা রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কাঁঠালিয়া উপজেলার চিংড়াখালী গ্রামের তুহাব্বর সিকদার, কৈখালি গ্রামের আবুল বাসার, ছৈলারচর এলাকার সেলিনা বেগম এবং কচুয়ার নাসির উদ্দিন দুর্ভোগের বিষয়ে নিউজবাংলাকে জানান।
তারা বলেন, ‘বিষখালীর কাঁঠালিয়া অংশে বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতি বছর বর্ষায় বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। জরুরিভাবে কাঁঠালিয়া অঞ্চলে বিষখালীর তীরে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন।
বুধ ও বৃহস্পতিবার দিনের চেয়ে রাতে জোয়ারের পানির চাপ অতিমাত্রায় বেড়েছে বলে জানিয়েছেন নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি এলাকার সরই গ্রামের বাসিন্দারা।
ওই গ্রামের নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা ভাঙ্গলকুলের বাসিন্দা। প্রতিবছর সুগন্ধা নদীর দক্ষিণ পাড় ভেঙে আমাদের ভিটেমাটি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। বর্তমানে জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে এলাকার মাটি নরম ক্ষয়ে যাচ্ছে। এই পানি নামার পর আবার আমরা ভাঙনের কবলে পড়ব। এ জন্য সরই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ আমাদের প্রাণের দাবি।’
ঝালকাঠি পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিষখালী নদীর পানির উচ্চতা ১ মিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি এখন বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী নিউজবাংলাকে জানান, পানির চাপ আরও বাড়লে নিম্নাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হবে।