৪০ ভরি সোনা ছিনতাইয়ের মামলায় ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম মো. বাবুল হোসেন। তিনি ভাঙ্গা থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মেহেদী হাসান মুন্সী ওরফে মৃদুল নামে কথিত সোর্সকে। মৃদুলের বাড়ি ভাঙ্গা পৌরসভার হোগলাডাঙ্গি সদরদী মহল্লায়।
নড়াইল লোহাগড়া উপজেলার জুয়েলারি ব্যবসায়ী পাপ্পু বিশ্বাস বুধবার ভাঙ্গা থানায় মামলা করেন ৪০ ভরি সোনা ছিনতাইয়ের অভিযোগে। পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্রের মুখে তার সোনা ছিনিয়ে নেয়া হয় বলে তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন। মামলা নেয়ার পাশাপাশি পুলিশ দ্রুত গ্রেপ্তার করে অভিযুক্ত এএসআই বাবুল ও সোর্স মৃদুলকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুই আসামিকে ফরিদপুরের তিন নম্বর আমলি আদালতে হাজির করা হয়। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অরূপ বসাক তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী আসামিদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘মামলার পরপরই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে এএসআই বাবুল হোসেনের ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লার বাসা থেকে জব্দ করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া সোনা।’
এজাহারে বলা হয়, নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার কামঠানা গ্রামের অজিত বিশ্বাসের ছেলে পাপ্পু বিশ্বাসের জুয়েলারি দোকান আছে যশোর শহরে। গত ৭ জুলাই রাতে তিনি ভাঙ্গা বাজারের সোনার তরী জুয়েলার্সের মালিক পলাশ বণিকসহ কয়েক জনের কাছে থেকে ১১০ ভরি সোনা কেনেন।
নড়াইল ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভাঙ্গা বাজারে তার গতিরোধ করেন এএসআই বাবুল হোসেন ও তার সহযোগী মেহেদী হাসান মৃদুল। তারা পাপ্পুর কাছে থাকা সোনা চোরাচালানের বলে দাবি করেন। বৈধ কাগজপত্র দেখালে ৭০ ভরি সোনা ফেরত দেন তারা। ৪০ ভরি সোনা রেখে ব্যবসায়ী পাপ্পুকে হুমকি দেন এএসআই বাবুল। তাকে ঘটনা ভুলে যেতে বলেন।
ঘটনার ছয় দিন পর গত বুধবার পাপ্পু বিশ্বাস ভাঙ্গা থানায় মামলা করেন।
ভাঙ্গা বাজারের সোনার তরী জুয়েলার্সের মালিক পলাশ বণিক জানান, ৭ জুলাই রাতে পাপ্পু বিশ্বাস কয়েক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সোনা কেনেন। ভাঙ্গা থেকে ফেরার সময় রাতে ছিনতাইয়ের শিকার হন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মুনতাসীর মারুফ বলেন, ‘ব্যবসায়ী পাপ্পু বিশ্বাস ভাঙ্গা থানার এএসআই বাবুল হোসেনসহ দুইজনের নামে ছিনতাইয়ের মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, ‘মামলার পাশাপাশি এএসআই বাবুল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না তা যাচাই করা হচ্ছে।’