জাতীয় নির্বাচনসহ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো দেশের জন্য অকল্যাণ ডেকে আনবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বলেছেন, যারা এ সুযোগ দিয়েছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা থাকলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। বাইরের দেশের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করলে নিজের দেশকেই ছোট করা হয়।’
বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাইরের কারোর কথা বলার কথা না। এটি আমার দেশের মর্যাদার ব্যাপার, যা জাতির জন্য মর্যাদাপূর্ণ নয়।
‘অন্য কোনো দেশ নির্বাচন নিয়ে যেমনি আমার মন্তব্য করা দায়িত্ব নয়, তেমনি একই প্রক্রিয়া অন্যদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমরা হয়ত কোনো কোনো ব্যাপারে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারি।’
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক আছে, আমাদের দেশেও নির্বাচন বিতর্কের ঊর্ধ্বে না। যেসব দেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যদের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দিচ্ছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান কিংবা লিবিয়ার দিকে তাকালে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায় বলেও মন্তব্য করেন তাজুল ইসলাম।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ প্রশ্নেও কথা বলেন তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। দেশের মানুষ সুখে আছে। যারা এই দেশটাকে চায়নি, যারা এ দেশের উন্নয়ন সহ্য করতে পারে না, তারা বিদেশিদের কাছে ধরনা দিবে এটাই স্বাভাবিক।’
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, খুন, মানবাধিকার, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনিত হয়েছিল।
এখন সেই অবস্থা নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ইউরোপের অনেক দেশের সঙ্গে তুলনা করার মতো অবস্থানে রয়েছে। করোনা মহামারির পরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পুরো পৃথিবী নাজুক অবস্থার মধ্যে যাচ্ছে। খাদ্যদ্রব্যসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে। কিন্তু পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশের তুলনায় আমাদের অবস্থা ভালো আছে।’
ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে তাদের বিভিন্ন প্রকল্প আছে, সেগুলো নিয়ে আলাপ হয়েছে। গ্রামীণ আদালত সক্রিয়করণ নামে একটি প্রকল্প রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশ আমাদের ফাইন্যান্সিয়াল এবং টেকনোলজিক্যাল সহায়তা দিয়ে থাকে।
‘কয়েকটি জেলায় এটি পাইলট প্রজেক্ট আকারে চলছিলে। এখন আমরা এই প্রকল্পটি সারা দেশে চালু করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে তারা অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে।’