বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রেরও কিছু করার নেই মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, তাদের দেশে নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয় না। বাংলাদেশেও তা হবে না।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘কৃষি খাতে সরকারি- বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) নিয়ে মিটিং শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিএনপি যদি মনে করে যে একটা আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে, সেটি কোনোদিনই হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডর যত ক্ষমতাশালী দেশেরই হোক, তিনি নির্বাচনে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারবেন না।
‘বিদেশিদের কাছে বিএনপির ধরনা দেয়া কোনো ব্যাপার না। তারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারে, চাইলে সহযোগিতাও করতে পারে।
‘যদি বিদেশিদের কোনো মতামত থাকে, তারা যদি আমাদের সহযোগিতা দেয় সেটিকে আমরা অভিনন্দন জানাব।’
বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই ভোট হবে- এটিও জানিয়ে দেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে আছে এবং সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এটি ক্লিয়ার।
‘আমরা সবাই চাই যে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকুক এবং সে অনুযায়ী দেশটি পরিচালিত হোক। স্বাভাবিকভাবেই তারাও (বিদেশিরা) চায় এই নির্বাচন সুষ্ঠু হোক, সুন্দর হোক, নিরপেক্ষ হোক। আমরাও বারবার বলার চেষ্টা করছি, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছি।
‘সারা পৃথিবীতে জাপান কিংবা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, কানাডা সব দেশেই নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও সরকার যারা নির্বাচন পরিচালনা করছে। পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। বিএনপি এই এক কথা টানা বলেই যাচ্ছে, ওরা যে রকম নিরপেক্ষ সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, সেটা কোনোদিনই হবে না।’
আওয়ামী লীগের অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সত্যিকার অর্থেই একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন হোক। যেটা শক্তিশালী ও সক্ষমতাসম্পন্ন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন সেটি করবে এবং স্বাধীনভাবে করার চেষ্টা করছে।
‘আমরা সরকার, প্রধানমন্ত্রী, সামরিক বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বেসরকারি প্রশাসন সবাই মিলে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করব।’
বিএনপিকে বিদেশিদের বদলে জনগণের কাছে যাওয়ার পরামর্শও দেন আব্দুর রাজ্জাক। বলেন, ‘এ দেশে ক্ষমতায় আসার জন্য জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ যাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে, তারাই সরকারে আসবে।
‘এ দেশে ৪৯ সালে পাকিস্তান হওয়ার পরে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে কিছু বলা মানে ছিল কাফের হওয়া। সেই সময়ও টাঙ্গাইলের শামসুল হক সাহেবকে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে জনগণ এমপি করেছিল।
‘তখনকার মুসলিম লীগের সাতজন মন্ত্রী গিয়ে এক মাস টাঙ্গাইলে ছিলেন। সেই সময়ও মুসলিম লীগের এমপি বানানো যায়নি। কাজেই এই দেশের মানুষ সব সময় সচেতনভাবেই ভোট দিয়েছে।’