যশোর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধোনিকে হত্যার মধ্য দিয়ে জনগণকে ‘মরণবার্তা’ দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি নেতার দাবি, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো। জনগণ যেন প্রতিবাদ করতে না পারে, সে জন্য বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবেই ধোনিকে খুন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন দাবি করেন।
গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে যশোরের নাজির শংকরপুরে আকবরের মোড় এলাকায় ধোনিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে পৌর বিএনপির নেতা শামীম আহম্মেদ মানুয়াসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান মণি।
এই মামলায় তিনজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন আল আমিন, মো. রায়হান ও শংকরপুর এলাকার ইছা মীর। এরা সবাই বিএনপি নেতা মানুয়ার ঘনিষ্ঠ।
স্বজনদের অভিযোগ, পূর্ববিরোধের কারণে ধোনিকে লোক দিয়ে খুন করিয়েছেন মানুয়া।
এই বিএনপি নেতা তার মেয়েকে এক যুবলীগ নেতার কাছে বিয়ে দিয়েছিলেন। সেই যুবলীগ নেতাকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেই মামলার আসামি ছিলেন ধোনি। এক মাস আগে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
রিজভী বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি বর্তমানে বাংলাদেশেও বিদ্যমান। এই যখন দেশের অবস্থা তখন বাংলাদেশের জনগণ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে কি না, সেই আতঙ্ক থেকে বিরোধী দল নিধনে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবেই যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধোনিকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলাধীন কালীগঞ্জ ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকে। এই সমস্ত হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত, এক বৃহত্তর মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ।
‘মানুষ যাতে সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করার সাহস না পায় এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণকে সেই মরণবার্তা দেয়া হলো।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রকৃত আইনের হাতের চেয়েও অবৈধ ক্ষমতার হাত অনেক লম্বা। ছাত্রলীগ, যুবলীগ এক সর্বনাশা সময় সৃষ্টি করেছে। বর্তমান এই ঘোর দুর্দিনে জনগণের জানমাল এখন ভয়ানক বিপন্ন। তাদের অব্যাহত গুম, খুন, নারী, শিশু নির্যাতনে সারা দেশে এক বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে।’
সরকারের নির্দেশেই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের হত্যা ও নির্যাতনের পথ বেছে নেয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন রিজভী। বলেন, ‘দেশে বেকারত্ব, দারিদ্র্য, অনাহার এবং জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য থেকে দৃষ্টি সরাতেই এই সকল হত্যাকাণ্ড।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডেরই বিচার হবে বাংলাদেশের মাটিতে। সময় আর বেশি নাই। এই সরকারের পতন আসন্ন।’