বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুবকের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

  •    
  • ১৩ জুলাই, ২০২২ ১২:৫২

ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার ভাই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়নি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি নিজে তার সঙ্গে ঢাকায় গেছি। তার মাথায় ও চোখে একাধিক আঘাত করা হয়েছে। এটা অ্যাক্সিডেন্টের রোগী না।’

নরসিংদী সদর উপজেলায় সাগর আহমেদ নামের এক যুবকের মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

হাসপাতালের নথি অনুযায়ী পুলিশ জানিয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তিনি। তবে পরিবারের দাবি, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সাগরকে হত্যা করা হয়েছে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ আসাদ মিয়া জানান, সোমবার ভোরের দিকে মো. রনি নামের এক যুবক সাগরকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের নথিতে এন্ট্রি করা হয়, সাগর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।

অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় চিকিৎসক তাকে ঢাকায় পাঠান। সোমবার রাত ২টায় রাজধানীর বিমানবন্দর রোডের শিন-শিন জাপান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সাগরের মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

সদর উপজেলার মাধবদীর ভগীরথপুর এলাকায় সাগরের বাড়িতে মঙ্গলবার বিকেলে কথা হয় তার স্ত্রী হামিদা বেগমের সঙ্গে।

তিনি জানান, সাগর মাধবদী পৌর শহরের টাটাপাড়া এলাকার ওয়াসিম মিয়া নামের এক যুবকের মাছের খামারে চাকরি করতেন। তবে এই কাজের নামে তারা সাগরকে দিয়ে অবৈধ কারবার করালে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।

হামিদা বলেন, ‘সোমবার ভোরে ওয়াসিমরা আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর তাকে মারধর করে চোখে ও মাথায় জখম অবস্থায় টাটাপাড়া মহল্লার রাস্তায় ফেলে রাখে।

‘উনি রাস্তায় পড়ে আছেন শুনে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। গিয়ে শুনি, ওয়াসিমের ভাই রনি তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে জানতে পারি, আমার স্বামীকে ঢাকায় নেয়া হচ্ছে। তখন আমার ননদও সঙ্গে যায়।

‘ঢাকায় হাসপাতালে উনার মৃত্যু হলে রনি তাকে রেখে পালিয়ে আসেন।’

সাগরের বড় বোন ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার ভাই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়নি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি নিজে তার সঙ্গে ঢাকায় গেছি। তার মাথায় ও চোখে একাধিক আঘাত করা হয়েছে। এটা অ্যাক্সিডেন্টের রোগী না। ঢাকার ডাক্তারও তাই বলেছেন। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’

বাবা মাসুদুর রহমান আব্দুল হাইও বলেন, ‘আমার ছেলে সাগরকে পরিকল্পিতভাবে মারা হয়েছে। আমি অসুস্থ থাকায় আইনের আশ্রয় নিতে পারিনি। তার মা দৌড়াদৌড়ি করছে। আমি সাগরের দুই শিশুসন্তান সাদিয়া আর ছোঁয়াকে নিয়ে বাড়িতে আছি।

‘স্যার, আপনারা একটা কিছু করেন। ওরা আমার ছেলেটারে মারল।’

এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওয়াসিম ও রনির টাটাপাড়ার বাড়িতে গিয়ে তাদের মা ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি।

তাদের মা রোকসানা বেগম জানান, সোমবার ভোর রাতে ওয়াসিমের মোটরসাইকেলে্র পেছনে বসে সাগর খামার থেকে বাসার দিকে আসছিলেন। মেয়রের বাড়ির সামনের রোডে আইল্যান্ডে ধাক্কা লেগে সাগর পড়ে যান। তিনি গুরুতর আহত হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকায় হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়েছে।

রনিকে কল দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। আর ওয়াসিমের নম্বর তার মা দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রকিবুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে খবর নিয়ে জানতে পেরেছি, রোড অ্যাক্সিডেন্টের পর সাগরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে অ্যাক্সিডেন্টের বিস্তারিত আমরা জানি না।

‘এখন রোড অ্যাক্সিডেন্ট কীভাবে মার্ডার হলো তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে। এখনও থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।’

এ বিভাগের আরো খবর